বড় দুই রাজনৈতিক নেতার দ্বন্দ্বে শেরপুর জেলার উন্নয়ন হয়নি

আজ ৭ অক্টোবর শনিবার সকাল ১১ ঘটিকায় শেরপুর জেলা উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক শেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা অডিটরিয়ামে “শেরপুর জেলার পর্যটন, শিল্প কলকারখানার উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে” নাগরিক ভাবনা শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় শেরপুর জেলার মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন বলেন, শেরপুর জেলা হতে পারতো মতিয়া চৌধুরীর জেলা নামে কিংবা হয়ে আতিউর রহমানের নামে পরিচিত হতে।

 

কিন্তু এই জেলা যে একটি জেলা এটাই অনেকে জানে না। বড় দুই নেতার দ্বন্দ্বে এবং সমন্বয়ে না থাকার কারণেই শেরপুর জেলার উন্নয়ন হয়নি। তিনি শেরপুর জেলা উন্নয়ন পরিষদ এবং নাগরিক সমাজের ব্যক্তিদের দুই নেতাকে এক টেবিলে বসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। তাছাড়া শিল্প উন্নয়নে তিনি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

আলোচনা সভার প্রারম্ভে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, শেরপুর জেলা প্রকৃতি, শিল্প কলকারখানা, অর্থনীতি এবং দক্ষ জনশক্তিতে সমৃদ্ধ থাকা সত্ত্বেও সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার সঙ্গী হতে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে পরিকল্পনা অর্থাৎ স্মার্ট জনশক্তি, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট গভর্নেন্স বাস্তবায়ন করা শেরপুর জেলায় খুব দ্রুত তার সাথে সম্ভব।

 

কিন্তু আমরা আমাদের চাহিদা সরকারের কাছে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছি। কিছু কিছু প্রশাসনিক ভৌত অবকাঠামো গড়ে ওঠা ছাড়া মূলত স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট জনশক্তি তৈরি করার কিছুই হয়নি। বাংলাদেশের সবচাইতে বড় পাহাড় সমৃদ্ধ এ জেলা হলেও এ জেলায় পর্যটন শিল্প উন্নয়নে কিছুই হয়নি বললেই চলে। নেই প্রচার প্রকাশে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে কোন কার্যক্রম।

অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় সাবেক অতিরিক্ত সচিব দিলদার আহমেদ বলেন, কক্সবাজার এলাকার মেরিন ড্রাইভের মত শেরপুর সীমান্ত এলাকায় করে ওঠা সড়ক হতে পারে হিল ড্রাইভ। শেরপুরের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরে তিনি বলেন মোগলআমলে শেরপুর জেলা ছিল একটি স্বাধীন সার্বভৌম এলাকা। তিনি বলেন, শেরপুরের অনেক নামকরা ব্যক্তি এবং অবসরপ্রাপ্ত উদ্বোধন কর্মকর্তারা শেরপুর জেলা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে সেই সাথে আমাদের সবাইকে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে আসতে হবে।

শেরপুর জেলা ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি জনাব রাজিয়া সামাদ ঢালিয়া বলেন, পর্যটন এলাকার সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে শব্দ দূষণ। তিনি শব্দ দূষণ রোধ এবং সমন্বিত পরিকল্পনা গড়ে তুলতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন শেরপুর জেলায় অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি হয়েছিল কিন্তু তাদের ইতিহাস আমরা ভুলে গেছি। ত্যাগী ব্যক্তিদের আমরা স্মরণ করি না বলেই আমরা আজ উন্নয়ন থেকে অনেক পিছিয়ে। শেরপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি শহীদুল ইসলাম বলেন, শেরপুর জেলার মানুষের চাহিদার অন্যতম হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। কিন্তু উন্নত চিকিৎসা সেবার জন্য নেই কোন মেডিকেল কলেজ তাই সবার আগে শেরপুর জেলায় সদরে একটি মেডিকেল কলেজ ও অত্যন্ত জরুরী।

সংগঠনের যুগ্ম সমন্বয়কারী এডভোকেট মনির যেমন শাশ্বত মনে বলেন, সত্যিকার অর্থে শেরপুর জেলায় বড় বড় নেতা হওয়ার কারণে শেরপুর এত পিছিয়ে। সে করে ছোট নেতা থাকলে এতদিন অনেক উন্নয়ন হত আমরা এ সকল বড় নেতাদের যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ দিতে চাই। এ সকল নেতারা সুযোগ আছে এখনো তারা উন্নয়ন বাস্তবায়ন করে দেখাক।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জনাব আবু সালেহ মোঃ নুরুল ইসলাম (হিরো) বলেন, শেরপুর সদরে এগ্রিকালচার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এগ্রিকালচার ইনস্টিটিউট এর মূল জমি পরিমাণ ৪৩ একর যার অর্ধেক অব্যবহৃত পড়ে আছে, এই জায়গাতে সরকার চাইলেই দুই দুটি বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল কলেজ গড়ে তুলতে পারে।

এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন গ্রীন ভয়েস এর সভাপতি রফিক মজিদ, মনিরুজ্জামান রিপন, আল আমিন রাজু, সুলতান মাহমুদ, সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের সামাজিক সংগঠনের নেতবৃন্দ, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সকল স্তরের জনসাধারণ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক মাসুদ হাসান বাদল ।

 

 

—প্রেস বিজ্ঞপ্তি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।