আমরা চাই জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হোক: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, নির্বাচনে আমাদের ফলাফল যাই হোক, এটা কোন বিষয় না। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। আমরা চাই জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হোক। আজ বিকালে শ্যামপুর থানা সংলগ্ন প্রধান সড়কে শ্যামপুর-কদমতলী থানা জাতীয় পার্টির কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, কারো দয়া-দাক্ষিণ্যে এমপি-মন্ত্রী হলে তাতে কোনো সম্মান নেই। গণমানুষের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার মধ্যেই প্রকৃত সম্মান। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের অধিকার হরণ করা হচ্ছে, যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি। প্রজাতন্ত্র হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষই দেশের মালিক। তারা দেশ পরিচালনার জন্য প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। প্রতিনিধিরা দেশের সাধারণ জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করবেন। প্রতিনিধিরা কাজ না করলে পরবর্তীতে সাধারণ মানুষেরা নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি পরিবর্তন করতে পারবেন।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে, সকল মানুষ সব অধিকার সমানভাবে ভোগ করবে।
জিএম কাদের বলেন, ১১ বছর অতিবাহিত হলো এখনো সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার হয়নি। ১১ বছরে ৯৫ বার তারিখ পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু তদন্ত রিপোর্ট দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট সংস্থা। দেশের মানুষ সাগর-রুনি হত্যার বিচার দেখতে চায়। তিনি বলেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন ঘাতকরা চিহ্নিত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে। ১১ বছর অতিবাহিত হলো দেশের মানুষ জানতে পারলো না, কেন বা কারা এই নির্মম হত্যাযজ্ঞ ঘটালো। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, সাগর-রুনি হাত্যাকাণ্ড কী সাংবাদিকদের জন্য সতর্ক বার্তা? এতবড় হত্যাণ্ডের বিচার হচ্ছে না, অথচ কারো যেন জবাবদিহিতা নেই। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারে দায়িত্বহীনতার দায় কেউ এড়াতে পারবে না। দেশের মানুষ মনে করছে, প্রভাবশালী একটি মহল সাগর-রুনি হত্যা মামলা প্রভাবিত করছে। সাধারণ মানুষের ধারণা, সত্য ফাঁস হয়ে যাবে সেই ভয় থেকেই সাগর-রুনি হত্যার বিচার হচ্ছে না। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আরও সাহসী হয়ে সত্য তুলে ধরুন। সাগর-রুনি হত্যার বিচার হতেই হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হলো, কিন্তু জড়িতদের শাস্তি হলো না। গণমাধ্যমের একটি রিপোর্টে অন্তত ১৩ জন বাংলাদেশির নাম উঠে এসেছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ডলার চুরির অভিযোগে অভিযুক্তদের কারো কারো প্রমোশন হয়েছে, অবারো কেউ কেউ ইতিমধ্যেই অবসরে চলে গেছেন। ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে মাত্র দেড় কোটি ডলার ফিরিয়ে আনা হয়েছে বাকি টাকা কবে দেশে আসবে তা কেউ জানে না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই। এ সময় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ডলার চুরির ঘটনা ৩৮ দিন কেন গোপন রাখা হলো? বাংলাদেশ ব্যাংকের তখনকার গভর্নর কেন এর ব্যাখ্যা দিলেন না? ডলার চুরির দায় তিনিও এড়াতে পারেন না।
জাতীয় পার্টির কো- চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে কর্মী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন মিলন, আলমগীর সিকদার লোটন, জহিরুল আলম রুবেল, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, ভাইস চেয়ারম্যান, সালমা হোসেন, আমির উদ্দিন আহমেদ ডালু, যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা প্রমুখ।