ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৫০,০০০ ছাড়াতে পারে

জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক এক কর্মকর্তা বলেছেন, ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৫০,০০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে সরকারের হিসাবে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৮ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ ও মানবিক সম্পর্ক বিষয়ক সমন্বয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন গ্রিফিথস স্কাই নিউজকে বলেছেন, এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। ফলে প্রকৃতপক্ষে কত মানুষ মারা গিয়েছেন তা চিন্তা করাও কঠিন। হতে পারে এই সংখ্যা দ্বিগুন বা তারও বেশি। এটা হবে আরও ভয়াবহ। প্রকৃতিও বাস্তব অর্থে কঠোর হয়ে উঠেছে। আমরা আসলে নিহতের সংখ্যা গণনা করি নি। ওদিকে শনিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, গত সোমবারের ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কমপক্ষে ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষ। সতর্কতা দিয়ে বলা হয়েছে, কয়েক ডজন হাসপাতালও মাটির সঙ্গে মিশে গেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।সরকারি হিসাবে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২৮,০০০ ছাড়িয়ে গেছে। সেখানে তাৎক্ষণিক সহায়তা ও আকাশচুম্বী চিকিৎসার প্রয়োজন মেটাতে ৪ কোটি ২৮ লাখ ডলারের জন্য আবেদন জানিয়েছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এরই মধ্যে তারা ইমার্জেন্সি ফান্ড থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ ডলার ছাড় দিয়েছে। মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিতদের বেঁচে থাকার সর্বোচ্চ স্বাভাবিক সময় ৭২ ঘন্টা। তা সত্তে¡ও তারও অনেক পরে শনিবার ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে কিছু মানুষকে। উদ্ধার অভিযান কখন শেষ হবে তা অবিশ্বাস্য রকম কঠিন। ভূমিকম্পের ফলে আন্তর্জাতিক যে সহায়তা আসছে তা অপ্রতুল।
শনিবার বিপুল ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে কয়েকজনকে। এর মধ্যে আছে একটি পুরো পরিবার। তারা ১৩০ ঘন্টারও বেশি সময় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে ছিলেন। ইলবিস্তানের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১৩২ ঘন্টা পরে উদ্ধার করা হয়েছে মেলিসা উলকু নামের এক যুবতীকে। একই সময়ে একই স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে আরও একজনকে। কাউকে জীবিত উদ্ধার করার পর সেখানে আনন্দ ফুটে উঠছে। মানুষ চিৎকার করছে। হাততালি দিচ্ছে। কিন্তু এমনটা করতে বারণ করেছে পুলিশ। কারণ, এ পরিস্থিতিতে আশপাশে যেসব উদ্ধারকর্মী কাজ করছেন, তাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটে।
এর ঘন্টাখানে আগে তুরস্কের গাজিয়ানতেপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৩ বছর বয়সী একটি কন্যা শিশুকে। হাতায় প্রদেশ থেকে উদ্ধার করা হয় ৭ বছর বয়সী একটি কন্যা শিশুকে।
মার্টিন গ্রিফিথস জোর দিয়ে বলেছেন, সিরিয়ার শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ বসবাস করছেন দারিদ্র্যে। দেশটিতে দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের কারণে এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠা তাদের জন্য আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
শনিবারের সর্বশেষ খবর অনুযায়ী তুরস্কে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২৪,৬১৭। সিরিয়া মিলে এই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ২৮,০০০। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শুধু তুরস্কেই কমপক্ষে ৪ হাজার ভবন ধসে পড়েছে। ১৫টি হাসপাতাল আংশিক বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।