সুরমা টাইমস ডেস্ক :
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন দেশটির এক নারী। সেই সঙ্গে কিমসহ পিয়ংইয়ংয়ের আরও চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই নারী।
গত বৃহস্পতিবার (১০ই জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯৭ সালে উত্তর কোরিয়া থেকে চীনে পালিয়ে যান চোই মিন কিয়ুং নামের ওই নারী।
কিন্তু ২০০৮ সালে তাকে জোরপূর্বক তার নিজের দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়। দেশে ফেরার পর তাকে আটক করে কোরীয় কর্তৃপক্ষ।
তার অভিযোগ, আটক থাকাকালে তাকে যৌন নির্যাতন ও মারধর করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়া-ভিত্তিক একটি অধিকার গোষ্ঠী জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার (১১ই জুলাই) এই মামলা দায়ের করা হবে।
চোই চীন থেকে ফেরার পর ২০১২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে যান এবং সেখানেই বসতি গাড়েন।
তিনি বলেন, “আমি যে অগ্নিপরীক্ষার মধ্য দিয়ে গিয়েছি, সেই মানসিক আঘাত এখনও রয়ে গেছে। আমি এখনও ওষুধের উপর নির্ভরশীল।”
তিনি আরও বলেন, “উত্তর কোরিয়ার শাসন ব্যবস্থার নির্যাতনের শিকার ও বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য কিম পরিবারকে জবাবদিহি করার এক গভীর ও জরুরি দায়িত্ব রয়েছে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি একটি ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন ঘটনা হতে যাচ্ছে। কারণ, প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়ায় জন্মগ্রহণকারী কোনো ব্যক্তি তার নিজ দেশের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
অতীতে দক্ষিণ কোরিয়ার আদালত একই ধরনের নির্যাতনের অভিযোগে নিজ দেশের নাগরিকদের করা মামলায় উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে।
তবে এই ধরনের রায়কে পিয়ংইয়ংয়ের পক্ষ থেকে মূলত প্রতীকী বিবেচনা করে উপেক্ষা করা হয়েছে।
অধিকার গোষ্ঠী ডাটাবেস সেন্টার ফর নর্থ কোরিয়ান হিউম্যান রাইটস (এনকেডিবি) বলেছে, তারা চোইয়ের মামলাটি জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।
চোই বলেন, “আমি আন্তরিকভাবে চাই, এই ছোট পদক্ষেপটি স্বাধীনতা ও মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারের ভিত্তিপ্রস্তর হয়ে উঠুক, যাতে এই নৃশংস শাসনের অধীনে আর কোনো নিরপরাধ উত্তর কোরীয় না ভোগেন।”
বছরের পর বছর ধরে আন্তর্জাতিক অধিকার গোষ্ঠীগুলো উত্তর কোরিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নথিভুক্ত করেছে।
এর মধ্যে রাজনৈতিক বন্দিদের নির্যাতন থেকে শুরু করে লিঙ্গ ও শ্রেণিভিত্তিক পদ্ধতিগত বৈষম্যও রয়েছে।