শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের বিক্ষোভ

সুরমা টাইমস ডেস্ক :

গত ১৩ জুলাই সিলেটের কাজিরবাজারস্থ নিরঞ্জন ঘোষের রেস্তোঁরার কর্মচারী দিনার আহমেদ রুমন’কে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত।

গতকাল ১৪ই জুলাই বিকেল ৫টায় সুরমা পয়েন্টে জমায়েত হয়ে মিছিলটি তালতলা, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, কাজিরবাজার, তোপখানা, জিন্দাবাজার হয়ে কোর্ট পয়েন্টে এসে জেলা সভাপতি মো. ছাদেক মিয়ার সভাপতিত্বে এবং ক্রিড়া সম্পাদক সুনু মিয়া সাগরের পরিচালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার,

 

শাহপরান থানা কমিটির সভাপতি খোকন আহমদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটু, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির আহবায়ক শুভ আজাদ শান্ত, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মনির হোসেন, অন্যতম নেতা আনোয়ার হোসেন,

 

দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি শাহীন আহমদ, জিন্দাবাজার আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মো. আলমাছ মিয়া, বাবনা আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোমিন মিয়া, বন্দরবাজার আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি সাহাব উদ্দিন, চন্ডীপুল আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মহিদুল ইসলামসহ প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন সিলেটের এ ঘটনা হোটেল শ্রমিকদের জীবনে বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। হোটেল শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত মালিকদের শোষণ নির্যাতন এমনকি মারধরের শিকার হতে হয়।

 

‘চা দিতে দেরি হবে’ এই সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে কর্মস্থলে যখন একজন হোটেল শ্রমিককে খুনের শিকার হতে হয়।

 

শ্রমিকদের চাকুরির নিশ্চয়তা, জীবনের নিরাপত্তা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন পরিচালনা করতে গিয়ে নানা বাধা বিপত্তি হামলা মামলার শিকার হতে হয়ে যেমন তেমনি কর্মক্ষেত্রে নূন্যতম নিরাপত্তা পান না হোটেল শ্রমিকরা।

 

শ্রমিকরা কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মালিকের মুনাফা লাভে কাজ করে গেলেও তাদের দেওয়া হয়না শ্রমের প্রকৃত মূল্য। কাজের বিনিময়ে তারা লাভ করতে হয় মৃত্যুবরণ।

হোটেল রেস্টুরেন্টে কর্মরত শ্রমিকরা বেশিরভাগই কৃষকের সন্তান। গ্রাম্য জোতদার মহাজনের শোষণে জমি থেকে উচ্ছেদ হয়ে বাধ্য হয়ে জীবিকার তাগিদে শহরে এসে হোটেল রেস্টুরেন্টে কাজ নিয়ে জীবন সংগ্রামে লিপ্ত হয়।

 

কিন্তু অব্যাহত মুদ্রাষ্ফীতি-মূল্যস্ফীতি এবং সরকারের মদতে মুৎসুদ্দি পুঁজিপতিরা অস্বাভাবিকভাবে চাল-ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতির কারণে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে জীবন-জীবিকা আরো সংকটগ্রস্থ ও অনিশ্চিত করে তুলেছে; তার বিপরীতে নির্বাচিত সরকার,

সামরিক সরকার, তত্ত¡াবধায়ক সরকার, অন্তবর্তীকালীন সরকার সহ সকল সরকারই মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছে। অতীতের সকল সরকারের ন্যায় বর্তমান সরকারের আমলেও মালিক শ্রমিক একতার কথা বলে শ্রমিক শ্রেণি ও শ্রমিক আন্দোলনকে বিভ্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্থ করে চলেছে।

 

সা¤্রাজ্যবাদের দালাল সকল সরকারই শ্রমিক আন্দোলনকে দমন করার জন্য রাষ্ট্রীয় পেটুয়া বাহিনী দিয়ে মামলা-হামলা এমনকি গুলি করে হত্যা করছে।

সমাবেশ থেকে নিহত দিনার আহমদে রুমনের হত্যার মূল আসামী গ্রেফতার হলেও তার সহযোগী খুনীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবি জানান এবং নিহতের আজীবন আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রেক্ষিতে সিলেটের প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।