সুরমা টাইমস ডেস্ক:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অসহযোগিতায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শুনানিতে এই অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
আদালত প্রসিকিউশনের উদ্দেশে বলেন, কেউ অসহযোগিতা করলে তা ট্রাইব্যুনালে আবেদন আকারে দেবেন।
জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় গত ২০শে জুলাই যাত্রাবাড়ীতে ইমাম হাসান তাইম হত্যা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদনের দিন ধার্য ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার।
আর শুনানি উপলক্ষে এ মামলার আসামি ওয়ারি জোনের তৎকালীন সহকারী পুলিশ কমিশনার তানজিল আহমেদ ও যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন ওসি আবুল হোসেনকে হাজির করা হয়।
এ সময় ট্রাইব্যুনাল মামলার তদন্তের অগ্রগতি ও আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চান। প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ বলেন, ছয় আসামির মধ্যে দুজন গ্রেফতার হয়েছেন। তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশ সহযোগিতা করছে না।
ট্রাইব্যুনাল জানতে চান তদন্ত দলের কোনো সমস্যা আছে কি না? প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘একজন আসামিকে (পুলিশ কর্মকর্তা) গ্রেফতার করতে গিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা।
কিন্তু ডিবি প্রধান রেজাউল করীম মল্লিক ও ডিএমপির তৎকালীন কমিশনার মাইনুল হাসানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সহযোগিতা করেননি।’
ট্রাইব্যুনাল বলেন, তাহলে কীভাবে বিচার হবে? যাঁরা কাজ করবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ট্রাইব্যুনালে আবেদন আকারে জানান, সরকারকে জানান। প্রয়োজনে তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, কী তদন্ত হচ্ছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। ১০০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। কতজন আসামি গ্রেফতার হয়েছে?
এ সময় প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেন, ‘৩৫ জন।’ ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘এত বড় ঘটনা।
প্রায় ২ হাজার মানুষ মারা গেছে। সেখানে মাত্র ৩৫ জন গ্রেফতার হয়েছে!’ ট্রাইব্যুনাল এ সময় কী কারণে আসামি গ্রেপ্তার হচ্ছে না, তার কারণ উল্লেখ করে প্রসিকিউশনকে জানাতে নির্দেশ দেন।
শুনানিতে যাত্রাবাড়ীর মামলায় প্রতিবেদন প্রস্তুত না হওয়ায় প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ দুই মাস সময় চেয়ে আবেদন করেন।
ট্রাইব্যুনাল এ সময় দুই মাস সময় দিয়ে বলেন, এ সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল এবং আসামি গ্রেফতার না হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
একই সঙ্গে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৬ই এপ্রিল দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।