কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষনার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে উলামা পরিষদ বাংলাদেশ’র স্মারকলিপি প্রদান

 

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ

 

প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে শেষ নবী অস্বীকারকারী আহমদিয়া মুসলিম ছদ্মনামধারী কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষনার দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে উলামা পরিষদ বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন উলামা পরিষদ বাংলাদেশ এর সহ সভাপতি মাওলানা মোস্তাক আহমদ খান, মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, মুফতি আবুল খায়ের বিথঙ্গলী, নয়াসড়ক মাদ্রসার মোহতামীম শায়েখ মাওলানা সাইফুল্লাহ, নির্বাহী সদস্য নোমানী চৌধুরী, হাফিজ মাওলানা আহমদ ছগির বিন আমকুনী, মাওলানা গাজী রহমতউল্লাহ, অর্থ সম্পাদক মাওলানা নিয়ামত উল্লাহ খাসদবিরী।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়-

 

১। প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে সর্বশেষ নবী অস্বীকারকারী আহমদিয়া মুসলিম জামাত ছদ্মনামধারী কাদিয়ানীদেরকে সরকারিভাবে সংখ্যালঘু অমুসলিম ঘোষণার জোর দাবি।

২। আহমদিয়া মুসলিম জামাত ছদ্মনামধারী কাদিয়ানীরা মুসলমান নয়; বরং ওরা পৃথক ধর্মের অনুসারি। ওরা নিজেদের মুসলিম পরিচয় দিয়ে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানছে। আর কারো ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানা সংবিধান পরিপন্থী। তাই সরকারের উচিত অনতিবিলম্বে আহমদিয়া মুসলিম জামাত ছদ্মনামধারী কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন।

৩। আহমদিয়া মুসলিম জামাত ছদ্মনামধারী কাদিয়ানী তথা কোন অমুসলিম মুসলমানদের ধর্মীয় পরিভাষা ব্যবহারের অধিকার রাখে না। ওদের ধর্মীয় কাজ সম্পাদনের স্থান মসজিদ নয়; বরং উপাসনালয় হবে। আহমদিয়া মসজিদ কোন মুসলমান বরদাশত করবে না। এ ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ।

৪। বিভিন্ন নামে আহমদিয়া মুসলিম জামাত ছদ্মনামধারী কাদিয়ানীদের সব ধরনের পণ্য বর্জনের জন্য মুসলমানদের আহ্বান।

৫। সুনামগঞ্জ জেলার সদর উপজেলাধীন ২নং গৌরারং ইউনিয়ন পরিষদের নোয়াগাঁও, বেড়াজালী ও নলওয়ার পার গ্রামে এবং শান্তিগঞ্জ উপজেলাধীন পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের বীরগাঁও গ্রামে ওরা নিজেদের আস্তানা গেড়ে বসেছে। আমাদের অনেক সরল-সহজ মুসলমানদেরকে ফুসলিয়ে ধর্মান্তরিত করছে। এমনকি ওরা সেখানে আহমদিয়া মসজিদ নামে উপাসনালয়ও তৈরি করেছে। অথচ তাদের দ্বীনের সঠিক বুঝ ও দাওয়াত দিতে গিয়ে আমাদেরকে নানাভাবে প্রশাসনের বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই ঐসব স্থানে দাওয়াতী কাজে প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা।

৬। পঞ্চগড়ের শহীদের রুহের মাগফেরাত ও আহতদের আশু রোগমুক্তি কামনা করছে। সাথে সাথে অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছে যে, পঞ্চগড়ে কাদিয়ানীদের দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার কারণে অনেক গ্রাম আজ পুরুষশূন্য। অনতিবিলম্বে এসব মামলা প্রত্যাহার এবং নিরীহ মুসলমানদের উপর থেকে প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধ।

৭। বাংলাদেশের যে কোন স্থানে আহমদিয়া মুসলিম জামাত ছদ্মনামধারী কাদিয়ানীরা ইসলামের নামে কোন জমায়েত কিংবা ইজতেমার অপচেষ্টা করলে তা প্রতিহত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব। এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে অনুরোধ।

৮। দেশে আহলে কুরআন নামে আরো একটি শ্রেণি হাদীসে রাসূল সা. অস্বীকারের ফিতনা শুরু করেছে। অথচ বিশ্বের সকল হক্কানী আলেমদের মত হচ্ছে, যারা হাদীসে রাসূল সা. অস্বীকার করবে তারাও কাফির। এদের অপতৎপরতা সম্পর্কে মুসলিম জনতাকে সতর্ক থাকার আহ্বান এবং উপরোক্ত প্রস্তাবসমূহ অনতিবিলম্বে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আবারো সরকার ও প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি।

 

উল্লেখ্য, কাদিয়ানীরা নিজেদের মুসলিম পরিচয় দেওয়ার অধিকার রাখে না। মুসলমানদের ধর্মীয় শব্দাবলী ব্যবহারের কোন অধিকার তাদের নেই। হিন্দু, খৃস্টান, বৌদ্ধ ইত্যাদি ধর্মের মত তারা কাদিয়ানী ধর্মমত হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে পারবে; তবে কোনভাবেই নিজেদের মুসলিম পরিচয় দিতে পারবে না। আমাদের মুসলমানদের মধ্যে বিভিন্ন মাযহাব ও মাসলাক রয়েছে।

 

কিন্তু খতমে নবুওয়াতের ব্যাপারে বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে কোন বিভাজন নেই। এই অভিশপ্ত কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে বিগত (২৭ মে) শনিবার সিলেট রেজিস্ট্রি মাঠে উলামা পরিষদ বাংলাদেশ এর উদ্যোগে সিলেট বিভাগীয় খতমে নবুওয়াত মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।