ডাক্তার স্ত্রীর করা যৌতুক মামলায় বিচারক স্বামীর বিরুদ্ধে পরোয়ানা
রংপুরে ডাক্তার স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুকের মামলায় বিচারক দেবাংশু কুমার সরকার (৩২) ও তার বাবা সুধাংশু কুমার সরকারের (৬০) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক-১ এর বিচারক মোস্তফা কামাল এ আদেশ দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সরকারি কৌঁসুলি খন্দকার রফিক হাসনাইন। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১লা মে ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উত্তর খয়ড়াকুড়ি গ্রামের নারায়ণ সরকারের মেয়ে ডা. হৃদিতা সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয় একই উপজেলার হালুয়াঘাট বাজারের সুধাংশু কুমারের ছেলে দেবাংশু কুমার সরকারের। বিয়ের আসরেই ৩০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন দেবাংশু ও তার পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় ওই সময় বিয়ে ভাঙার উপক্রম হয়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই নতুন গাড়ি কেনার জন্য রংপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক দেবাংশু কুমার সরকার আবারো যৌতুক দাবি করে নানা ধরনের চাপ দিতে থাকেন। এর জেরে বিভিন্ন সময় হৃদিতাকে নির্যাতন করে আসছিলেন তিনি। এরপর হৃদিতা তার বাবার বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে অবস্থান করেন।
এরইমধ্যে হৃদিতা জানতে পারেন দেবাংশু কুমার দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এ নিয়ে ১৭ই এপ্রিল কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। পরে ডা. হৃদিতা ১৯শে এপ্রিল বিচারক দেবাংশু কুমার সরকার (৩২), তার বাবা সুধাংশু কুমার সরকার (৬০), ফুপাতো ভাই নিলয় দে সরকার (২৭) ও চাচা রঞ্জন সরকারে (৫০) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে চার্জশিট জমা দিলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক-১ এর বিচারক মোস্তফা কামাল দেবাংশু কুমার সরকার ও তার পিতা সুধাংশু কুমার সরকারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এ সময় আদালতে আসামিরা অনুপস্থিত ছিলেন। পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার বিএবিএম জাকির হোসেন বলেন, বাদী ও বিবাদী দুজনই সম্মানজনক পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। তাই এটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মামলা। আমরা আদালতে সাক্ষী ও আলামতের আলোকে একটি পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করেছি। এ নিয়ে ভিকটিম নারাজি দিয়েছেন। আদালত সিদ্ধান্ত নেবে কোন অংশটুকু আমলে নিতে হবে বা কোন অংশটুকু বাদ দিতে হবে। সরকারী কৌঁশলি খন্দকার রফিক হাসনাইন বলেন, বিচারক দেবাংশু কুমার সরকারের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছিল। সেই মামলায় আদালতের বিচারক দেবাংশু কুমার সরকার ও তার বাবা সুধাংশু কুমার সরকারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।