৭ মাসে রেমিট্যান্সে শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসীরা
স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। এবার সেই সৌদিকে পেছনে ফেলে প্রবাসী আয়ে শীর্ষস্থানে চলে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) দেশে প্রবাসীরা ১ হাজার ২৪৫ কোটি ২১ লাখ ডলার পাঠায়। এ সময় সবচেয়ে বেশি ডলার পাঠিয়েছেন যুক্তারাষ্ট্রের প্রবাসীরা। দেশটি থেকে ২২৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার পাঠায় প্রবাসীরা। আর সৌদি থেকে এসেছে ২২১ কোটি ৭৮ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে অর্থাৎ জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলো ৩৬ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। এর পরের মাস আগস্টে আসে ৩৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৭ কোটি ৭৭ লাখ, অক্টোবরে ২৩ কোটি ৩৬ লাখ, নভেম্বরে ৩০ কোটি ৪৯ লাখ, ডিসেম্বরে ৪২ কোটি ৮২ লাখ এবং সদ্য বিদায়ী জানুয়ারি মাসে এসেছে ২৯ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। অর্থাৎ সাত মাসে দেশটিতে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীরা মোট ২২৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন।
ডলার সংকটের মধ্যে রেমিট্যান্স পাঠানোর তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সৌদির প্রবাসীরা। মধ্যপ্রচ্যের দেশটি থেকে আসে ২২১ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিলো প্রায় ৩৫ কোটি বা ৩৪ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। এরপরে আগস্টে ৩৪ কোটি ১৭ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৩০ কোটি ৭৬ লাখ, অক্টোবরে ৩০ কোটি ৮৫ লাখ, নভেম্বরে ২৯ কোটি ৫২ লাখ, ডিসেম্বরে ৩০ কোটি ৬৩ লাখ এবং জানুয়ারিতে আসে ৩০ কোটি ৮৭ লাখ ডলার।
অর্থবছরের প্রথম এই সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) দুবাই থেকে প্রবাসীরা ১৬৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলার পাঠিয়েছে। এছাড়া যুক্তরাজ্যের প্রবাসীরা পাঠায় ১১১ কোটি এবং কুয়েতের প্রবাসীরা ৯০ কোটি ৫৮ লাখ ডলার।
তথ্য বলছে, চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ অর্থবছরের শুরুর দুই মাস দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। এর পরই কমতে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ যা দেড় বিলিয়ন বা তার কাছাকাছি। এর পরের মাস সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার, অক্টোবরে এসেছিল ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার এবং সদ্য বিদায়ী জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার।
এদিকে রেমিট্যান্সের ওপর আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অন্যদিকে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস এসোসিয়েশন (বাফেদা) ও এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) যৌথভাবে ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্স কেনার জন্য দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। বর্তমানে ১০৭ টাকায় রেমিট্যান্স ও ১০৩ টাকায় রপ্তানি বিলের মাধ্যমে আসা ডলার সংগ্রহ করছে ব্যাংক। এর ফলে চলতি বছরের শুরুতেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা বেড়েছে।
এর আগে গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা।