ফিলিস্তিন নিয়ে মুসলিম ঐক্য ধ্বংসের ষড়যন্ত্র আমিরাতের!

সুরমা টাইমস ডেস্ক :

অধিকৃত গাজা উপত্যকায় শান্তি ফেরাতে কিছুদিন আগে পরিকল্পনা পেশ করে মিসর। আরব বিশ্বের নেতাদের এক টেবিলে বসিয়ে সেই প্রস্তাব পাসও করিয়ে নেন মিসরীয় প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসি।

 

কিন্তু এখন সেই পরিকল্পনার বিরোধিতা শুরু করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। শোনা যাচ্ছে, পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে দেশটি।

 

মার্কিন ও মিসরীয় কর্মকর্তাদের বরাতে এমন খবর প্রকাশ করেছে মিডল ইস্ট আই। সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছে, আমিরাতের কর্মকর্তারা ট্রাম্প প্রশাসনে তদবির চালাচ্ছেন যাতে মিসরের প্রস্তাবটি কার্যকর না হয়।

 

মিসরের পরিকল্পনায় আমিরাতের আপত্তির সবচেয়ে বড় কারণ গাজা তাদের হাতছাড়া হয়ে যাওয়া। তারা নিজেরাই গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠতে চান।

 

বিশেষ করে উপত্যকায় ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের প্রভাব কতখানি থাকবে, তা নিয়েও আরব বিশ্বের নেতাদের মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

 

এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে খোদ মার্কিন কূটনীতিকরা। এতে করে ওই অঞ্চলে আমেরিকার স্বার্থে আঘাত আসতে পারে, এমনটাই বিশ্বাস তাদের।

 

মিসর ও আমিরাত দুই দেশই গাজার দায়িত্ব ফাতহার নির্বাসিত সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ দাহলানের কাঁধে তুলে দিতে চায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি বিষয়ে আমিরাত প্রকাশ্যে মিসরের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান জানাচ্ছে।

 

মিসর যেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের দেশটিতে ঠাঁই দেয় এজন্য কায়রোকে চাপ দিতে হোয়াইট হাউজকে প্রোরোচিত করছে দুবাই।

 

যুক্তরাষ্ট্রে আমিরাতের প্রভাবশালী রাষ্ট্রদূত ইউসুফ আল ওতাইবা ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজন। তিনি মিশরের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন।

মিসর যেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের দেশটিতে ঠাঁই দেয় এজন্য কায়রোকে চাপ দিতে বলছেন তিনি।

মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডেরই একটি শাখা হচ্ছে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সংগঠন হামাস। সামরিক নেতৃত্বাধীন মিসরীয় সরকার মুসলিম ব্রাদারহুডকে গুড়িয়ে দিলেও ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের কর্মকর্তাদের চলাফেরায় কিছুটা স্বাধীনতা দিয়েছে।

 

সংগঠনটির নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে মিসরের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের গোপন যোগাযোগ রয়েছে।

বিশেষ করে সংগঠনটির কাসেম ব্রিগেডের মাধ্যমে যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে মিশর। এই সূত্র ধরেই গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব বাস্তবায়ন করে কায়রো।

 

ফিলিস্তিনি সংগঠনটির সঙ্গে মিসরের এই সম্পর্কেই সামনে এনে মুসলিম ঐক্যকে বিপাকে ফেলতে চাইছে আমিরাত।

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যক্ষ মদদে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। কেবল মঙ্গলবারই ইসরায়েলি হামলায় ৪ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

 

নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ঠিক এমন পরিস্থিতির মধ্যেই শান্তি প্রচেষ্টায় আমিরাতের বাধার খবর প্রকাশ্যে এলো।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।