
উত্তম কুমার পাল হিমেল,ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
নবীগঞ্জের ব্যস্থতম সড়ক শহর টু-আইনগাঁও সড়কের বেহালদশা দীর্ঘদিন যাবত চলমান থাকায় লাখো মানুষের দুর্ভোগের কান্না যেন দেখার কেউ নেই।
তাই এ রাস্তাটি সংস্কারের দাবিতে লাল-সবুজ সমাজকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে বিগত ৯ই জানুয়ারী আয়োজিত মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচির অংশ হিসেবে লাল-সবুজ সমাজকল্যাণ পরিষদ কর্তৃক বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) সকালে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন এর বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
এসময় স্মারকলিপির পাশাপাশি রাস্তার বর্তমান অবস্থার কিছু চিত্র ছবি ও বিভিন্ন পত্রিকা ও মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদসমূহও প্রদর্শন করা হয়। রাস্তায় চলাচলকারী মানুষের চরম দুর্দশার কথা বর্ণনা করার পর ইউএনও খুব দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন লাল-সবুজ সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি হুমায়ুন কবির আজিম, সাধারণ সম্পাদক আরিফ হাসনাত ফাহিম, সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, মহসিন হোসেন, হৃদয় আচার্য মিঠুন, শাহ নুহাদ আহমেদ, ওসামা চৌধুরী, বুরহান আহমেদ, এলাকাবাসীর পক্ষে বাছিতুর রহমান রুহেল, দীপঙ্কর দাশগুপ্ত ও আলাল হোসেন প্রমূখ।
উল্লেখ্য, নবীগঞ্জ টু রুদ্রগ্রাম (আইনগাওঁ) সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে ছোট বড়ো গর্তে একাকার হয়ে বেহাল অবস্থায় পরিনত হয়েছে। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের মধ্যে অন্যতম নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম (আইনগাওঁ) সড়ক।
প্রায় ১৫ কিলোমিটার অংশজুড়ে এ সড়কের বেহাল দশা। অধিকাংশই রাস্তাই খানাখন্দ আর বড় বড় গর্তে ভরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই গর্তে পানি জমে যায়। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোটবড় নানা দুর্ঘটনা।
এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থী, পথচারী, যাত্রীসাধারণসহ পরিবহণ চালকদের। সড়কটির সংস্কার কাজে ২০১৯ইং সালে সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয় হলেও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে এটি কোনো কাজে আসেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
তারা দ্রুত টেকসই পূণঃনির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাথে নবীগঞ্জ শহরের একমাত্র বাইপাস সড়ক নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রামের এই সড়কটি উপজেলার পানিউমদা, গজনাইপুর, দেবপাড়া ও বাউসা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ পার্শ্ববতী বাহুবল উপজেলার স্নানঘাট ইউনিয়নের অগণিত মানুষের চলাচলের একমাত্র অবলম্বন এ সড়ক।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিদিন লাখো মানুষের চলাচলের অবলম্বন এ সড়কটি। এই সড়ক দিয়ে শাহ তাজ উদ্দিন কুরেশী (রহ.) উচ্চ বিদ্যালয়, ধুলচাতল তাজিয়া মোবাশ্বীরিয়া আলিম মাদ্রাসা, দিনারপুর কলেজ, দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়, দিনারপুর দাখিল মাদ্রাসা, পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল এন্ড কলেজসহ অসংখ্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনকে চলাচল করতে হয়।
একমাত্র বাইপাস সড়ক হওয়ায় ট্রাক, ট্রাক্টর, অটোভ্যান, ব্যাটারী ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস প্রতিনিয়ত চলাচল করলেও অনেক যানবাহন ইতোমধ্যেই কমে গেছে। রাস্তার করুন দশা দেখে অনেকই তাদের অটোরিক্সা বিক্রি করে বিকল্প কর্মসংস্থানের সন্ধানে ছুটছেন।
ফলে যানবাহনের উপর নির্ভরশীল কলেজ, স্কুল ও মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও ব্যবসায়ীসহ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। রাস্তাটি সংস্কার কাজে নানা অনিয়ম হওয়ায় বর্তমানে কোথাও কোথাও পাকার চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় না।
নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম (আইনগাওঁ) প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়কের আইনগাঁও, ভহরপুর, চৌধুরী বাজার, বাউসা বাজার, বাউসা পয়েন্ট, বাউসা মাদ্রাসা পয়েন্ট, নাদামপুর মাদ্রাসা পয়েন্ট, রিফাতপুর, শিবপাশাসহ সড়কজুড়ে কার্পেটিং ওঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একেকটা গর্ত মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
একটু বৃষ্টিতেই রাস্তার খানা-খন্দে বৃষ্টি হলেই পানি ভরে যাবে। কাঁদামাটি-পানি অতিক্রম করে যানবাহন চলাচল করতে হয়। লাখো মানুষকে নানা প্রতিকূলতা আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে এ সড়কে। ছোট-বড় দূর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত।
সম্প্রতি ওই সড়ক দিয়ে এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে একজন গর্ভবতী মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে রাস্তায়ই ডেলিভারি হয় ওই প্রসুতি মা’য়ের।
এলাকাবাসী বলেন, নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়কের বেহাল অবস্থা, একদিন নবীগঞ্জ গেলে বাড়িতে এতে শরীর ব্যথার ওষুধ খেতে হয়।
দ্রুত সংস্কার নয় পুণঃনির্মাণ করা হলে জনসাধারণ অনেক উপকৃত হবে। বর্তমানে এই সড়কটি হয়ে উঠেছে লাখো মানুষের কান্না’র কারণ। এর প্রেক্ষিতেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।