সিলেটে আলোচিত আতিয়া মহলে জঙ্গি কার্যক্রমের মামলার শুনানি ১৪ মার্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক::

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকাস্থ আলোচিত আতিয়া মহলে ২০১৭ সালের মার্চে জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়। ওই মহলে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেএমবি জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছিল। ওই ঘটনায় দায়েরকৃত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় আজ সোমবার আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মাদ নুরুল আমীন বিপ্লবের আদালতে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে আছে বলে জানা গেছে। আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৪ মার্চ তারিখ ধার্য্য করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, শুনানিতে জেএমবি সদস্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষাংছড়ি থানার বাইশারীর নুরুল আলমের ছেলে জহুরুল হক ওরফে জসিম (২৯), নুর হোসেনের ছেলে মো. হাসান (২৮) ও জহরুল হক ওরফে জসিমের স্ত্রী মোছা. আর্জিনা ওরফে রাজিয়া (২১) আদালতের এজলাসে হাজির ছিলেন।

মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে আছে বলে জানা গেছে। আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৪ই মার্চ তারিখ ধার্য্য করেছেন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ দিবাগত রাত থেকে আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু হয়। অভিযানে র‌্যাব, পুলিশ, সিআরটির পর সর্বশেষ যোগ দিয়েছিল সেনাবাহিনীর কমান্ডো দল। টানা ১১১ ঘণ্টা অভিযান চলে আতিয়া মহলে। সেনাবাহিনীর অভিযানের নাম ছিল ‘অপারেশন টোয়ালাইট’। অভিযান শেষে মহল থেকে চার জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একজন নারী ও তিন জন পুরুষ ছিলেন।

এদিকে, অভিযান চলাকালে আতিয়া মহল থেকে খানিক দূরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের তৎকালীন প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ ও দুই পুলিশ সদস্যসহ মোট সাত জন নিহত হন।

মহলটিতে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শেষে মামলা হয় তিনটি। প্রথমে পুলিশ মামলার তদন্ত করে। পরে তা স্থানান্তর হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে। ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়। এতে জহুরুল হক, তার স্ত্রী আর্জিনা বেগম ও মো. হাসানকে অভিযুক্ত করা হয়।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ২০১৭ সালে পৃথক জঙ্গিবিরোধী অভিযানে জহুরুল ও তার স্ত্রী আর্জিনাকে এবং কুমিল্লার চান্দিানা থেকে মো. হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তাদেরকে আতিয়া মহলের মামলার গ্রেফতার দেখানো হয়।

তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যক্রমকে প্ররোচিত করে নাশকতার পরিকল্পনা, মানুষ হত্যা ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।

এদিকে, আতিয়া মহল অভিযানকালে বোমা বিস্ফোরণ ও হত্যার ঘটনায় আরও দুটি মামলা হয়। সে দুটি মামলায় ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই চুপিসারে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই। প্রতিবেদনে মামলা নিষ্পত্তির আবেদন করা হয়।

 

এর কারণ হিসেবে বলা হয়, তদন্তকালে জানা যায় আতিয়া মহলের অদূরে রাস্তায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গি মোশারফ ও নাজিম। তারা দুজনই মৌলভীবাজারে জঙ্গি আস্তানার অভিযানে মারা গেছে। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিল। তবে তারা অজ্ঞাত। তাদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি।

আতিয়া মহলে অভিযানের পরপরই মৌলভীবাজারের বড়হাটাসহ দুটি স্থানে জঙ্গিবিরোধী অভিযান হয়েছিল।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।