আজ থেকে সিলেটে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি

সুরমা টাইমস ডেস্ক :

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬ টা থেকে অনির্দিষ্টাকালের জন্য সিলেটে সর্বস্তরের পরিবহন মালিক শ্রমিকদের কর্মবিরতি ডাক দিয়েছে সিলেট বিভাগীয় পরিবহন মালিক শ্রমিক পরিষদ।

 

পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া, সিলেটের জেলা প্রশাসকের অপসারণের দাবিসহ এবার ৬ দফা দাবিতে এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে তারা।

 

তবে এই ধর্মঘটে পরীক্ষার্থী বহনকারী গাড়ি ও জরুরী সেবায় নিয়োজিত পরিবহন আওতামুক্ত থাকবে।

 

সিলেট বিভাগীয় সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রেবাস, ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, সিএনজি, ইমা-লেগুনা ও পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এই আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়।

 

জেলা প্রশাসকের অপসারণসহ ৫ দফা দাবিতে গত শনিবার থেকে পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করে।

 

৪৮ ঘন্টার পর তারা জেলা প্রশাসকের অপসারণ থেকে সরে নতুন আরেকটি দাবি সংযুক্ত করে আর ২৪ ঘন্টা বাড়িয়ে মোট ৭২ ঘন্টার কর্মবিরতি পালন করে।

 

আশুরা ও বিএনপির কর্মসূচির কারণে অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে কর্মসূচি পালিত হয়। এরমধ্যে দাবি না মানলে মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতির হুমকি দেয় সংগঠনগুলো।

 

এরই মধ্যে সোমবার রাতে আন্দোলনের সাথে সমর্থন নেই বলে ঘোষণা দেয়  জামায়াতে ইসলামীপন্থী পরিবহন মালিকেরা।

 

এ সময় এ আন্দোলনকে মালিক-শ্রমিকের কল্যাণহীন দাবি করে জুলাই আন্দোলনের চেতনা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করা হয়।

সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ও জামায়াত নেতা মাওলানা লোকমান আহমদ এ ঘোষণা দেন।

 

মাওলানা লোকমান আহমদ জানান, রবিবার (৬ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টায় দক্ষিণ সুরমা বাস টার্মিনালে এক জরুরি বৈঠকে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

 

তারা মঙ্গলবার থেকে তাদের গাড়ি রাস্তায় চলবে বলেও জানান। জামায়াতপন্থী পরিবহন মালিকদের সরে যাওয়ার ঘোষণায় আন্দোলনে স্পষ্ট বিভাজন তৈরি হয়।

 

এই প্রেক্ষাপটে সিলেট বিভাগীয় সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রেবাস, ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, সিএনজি, ইমা-লেগুনা ও পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে অনির্দিষ্টাকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা কতটুকু পালিত হবে তা নিয়ে আন্দোলনকারীদের মধ্যেই রয়েছে অনিশ্চয়তা।

এর মধ্যে জামায়াতের পরিবহন মালিকদের গাড়ি রাস্তায় বের করলে হতে পারে সংঘাত।

 

তবে সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে পরিবহন-মালিক সমিতির নেতারা জানান, আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল থেকেই কর্মবিরতি শুরু হবে এবং দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তা চলবে।

 

দাবি পূরণের দাবিতে আগে পাঁচ দফা থাকলেও এখন ছয় দফায় উন্নীত হয়েছে। নতুন করে এতে যুক্ত হয়েছে সিলেটের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে প্রত্যাহারের দাবি।

 

ছয় দফা দাবিগুলো হলো—

১. সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৩৬ ধারা অনুযায়ী বাস-মিনিবাসের ২০ বছর, ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যানের ২৫ বছর এবং সিএনজি ও ইমা লেগুনার ১৫ বছর ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিল.

২. সিলেটের সব পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার এবং সনাতন পদ্ধতিতে বালু মহাল ও পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া.

৩. বিআরটিএ কর্তৃক গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র ব্যবস্থা বাতিল ও গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহনের ওপর আরোপিত বাড়তি কর প্রত্যাহার.

৪. সিলেটের সব ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ বন্ধ, বিদ্যুৎ মিটার ফেরত, ভাঙচুরকৃত মিল ও গাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া পাথর-বালুর ক্ষতিপূরণ প্রদান.

৫. সড়কে বালু-পাথরবাহী ও অন্যান্য পণ্যবাহী যানবাহনের চালকদের হয়রানি বন্ধ.

৬. সিলেটের পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় জেলা প্রশাসককে অবিলম্বে প্রত্যাহার।

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।