নিজস্ব প্রতিবেদক::
অবশেষে এক সপ্তাহের বকেয়া বেতন নিয়ে কাজে ফিরেছেন সিলেটের বুরজান টি ফ্যাক্টরি, বুরজান, ছড়াগাং ও কালাগুল বাগানের চা শ্রমিকরা।
গত শুক্রবার (৯ই মে) সকাল থেকে নিজ নিজ চা বাগানে পাতা তোলার কাজ শুরু করেন তারা।
চা শ্রমিক নেতা সোহাগ ছত্রী জানান, শুক্রবার সকালে চা শ্রমিকদেরকে আশ্বাস অনুযায়ী ৭দিনের বকেয়া বেতন দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও নিজে এসে চা বাগান পরিদর্শন করে আমাদেরকে বেতন পরিশোধ করেছেন। আর টাকা দেওয়ার পর সবাই কাজে ফিরেছেন।
গত বুধবার বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়্যারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেনের সাথে আন্দোলনরত শ্রমিকদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে দুপুরে সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোশনূর রুবাইয়াৎ বলেন, চা বোর্ডের চেয়্যারম্যান চা বাগান শ্রমিকদের দাবি দাওয়াগুলো শুনেছেন।
বৈঠকে আপাতত তাদেরকে এক সপ্তাহের বকেয়া বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজন্য টি কোম্পানিগুলো ও বাংলাদেশ টি বোর্ড ১০ লাখ টাকা দিবে। বাকি টাকা জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা করে দিবেন। পর্যায়ক্রমে তাদের সব বকেয়া পরিশোধ করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০ সপ্তাহ ধরে রেশন ও বেতন পাচ্ছেন না সিলেটের বুরজান টি এস্টেটের আওতাধিন তিনটি বাগান ও একটি কারখানার শ্রমিকরা। লোকসানের কথা বলে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের মজুরি বন্ধ রেখেছে।
বকেয়া মজুরির দাবি ও বুরজান চা বাগান মালিকের লিজ বাতিসহ ১১দফা দাবিতে গত ৪ মে আম্বরখানা-এয়ারপোর্ট সড়ক অবরোধ করেন বুরজান, ছড়াগাং, কালাগুল বাগানের চা শ্রমিকেরা।
পরে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ উঠিয়ে রাস্তা ছাড়লেও আগামী ৩ দিনের মধ্যে সকল দাবি মানতে সময়সীমা বেধে দেন চা শ্রমিকরা।
চা শ্রমিকদের নিয়ে সৃষ্ট এ সমস্যা সমাধানের জন্যই গত বুধবার সিলেটে আসেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়্যারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মোসরওয়ার হোসেন। তার সাথে বৈঠকের পর এসব বাগানের দীর্ঘ অচলাবস্থার নিরসন হতে যাচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোশনূর রুবাইয়াৎ বলেন, শুক্রবার এক সপ্তাহের বকেয়া বেতন দেওয়া হয়েছে। বকেয়া বেতন পেয়ে তারা কাজে ফিরেছে।
শ্রমিকরা এখন চা পাতা উত্তোলন করবেন। উত্তোলিত চা পাতা কাঁচায় বিক্রি করা হবে। এই টাকা দিয়ে দ্রুতই তাদের অবশিষ্ট দিনের বকেয়া পরিশোধ করা হবে।
পাশাপাশি আগামী রবিবার বা সোমবার জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে চা শ্রমিকদের।
তিনি বলেন, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় কারখানার লাইন কাটা রয়েছে। এজন্য চা পাতা তুলে এখনই চা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না।
কারখানা চালু হলে সংকটগুলো শীঘ্রই কাটবে। আর কারখানা চালুর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।