জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে মাতৃভাষা দিবস উদযাপন

সুরমা টাইমস ডেস্ক :

জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে (জেসিপিএসসি) যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ‘শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫’ পালন করা হয়।

২১শে ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে শুরু হয় কর্মসূচির।

সকাল ৯ ঘটিকায় প্রভাতফেরির মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল তাহিয়াত জালাল চৌধুরী, পিএসসি এর নেতৃত্বে প্রভাতফেরিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানের শহিদ মিনারে গিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

সকাল সাড়ে নয়টায় প্রতিষ্ঠানের অডিটোরিয়ামে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও মোনাজাত, কবিতা আবৃত্তি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনাসভা এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাওহিদুল ইসলাম শিমুল ও মোনাজাত পরিচালনা করেন সহকারী শিক্ষক মো. আতাউর রহমান।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তটিনী লাজবন্তি ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোহাম্মদ তাওসিফ এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন প্রভাষক মিনহা ইসলাম প্রমি, একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহদিন শাহরিয়ার শান এবং দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রুবাবা বিনতে তারেক।

অধ্যক্ষ তাঁর বক্তব্যে ভাষা শহিদদের পাশাপাশি বাঙালির স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের সকল পর্যায়ে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনকারী সবার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

তিনি বলেন, ‘৫২ সালের ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের ভেতর দিয়ে বাঙালি জাতিসত্তায় জন্ম নিয়েছিল একুশের চেতনা।

এই চেতনা আমাদের জাতীয় জীবনে আত্মত্যাগের বীজমন্ত্র। পরবর্তীতে প্রতিটি গণআন্দোলনের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে এই ভাষা আন্দোলন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সে সময়ে বাঙালির আত্মসচেতনতা ও আত্মপরিচয়ের যে বোধোদয় ঘটেছিল তা-ই নানা আন্দোলন-সংগ্রামের ভেতর দিয়ে রূপ নিয়েছিল অধিকার আদায় ও স্বাধীনতার সংগ্রামে।

 

একুশের পথ ধরেই ৫৪ এর নির্বাচনে বিজয়, ৬৬ এর স্বাধিকার আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের ৩০ লাখ শহিদের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে আপন মহিমায় প্রতিষ্ঠা লাভ করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।’

ভাষা আন্দোলনের অমর স্মৃতি-বিজড়িত মহান একুশে ফেব্রুয়ারি এখন আর আমাদের ইতিহাসের একটি রক্ত-রঙিন দিন নয়; এ দিন এখন পেয়েছে বিশ্বস্বীকৃতি, পেয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা।

বাঙালি জাতিসত্তার এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় এই একুশে। একুশে ফেব্রুয়ারি আজ শুধু মহান শহিদ দিবস নয়, এটি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বিশ্বের মানুষ এখন জানে যে, মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গকারী একমাত্র জাতি এই বাংলাভাষী বাঙালি জাতি। পৃথিবীর বুকে এটি এক বিরল ইতিহাস।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বক্তব্যে সর্বস্তরে মাতৃভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করা, ভাষার উৎকর্ষ সাধনে শুদ্ধ মাতৃভাষার চর্চা এবং বই পড়ার গুরুত্বটি ওঠে আসে। ভাষার বিকৃতি রোধে সবাইকে সচেতন হওয়ারও পরামর্শ প্রদান করা হয়।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ।

 

অনুষ্ঠানের সার্বিক সমন্বয় করেন উপাধ্যক্ষ সহকারী অধ্যাপক শারমিন আক্তার এবং অনুষ্ঠানের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন সহকারী অধ্যাপক অপর্ণা বিশ্বাস।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।