বাজেট প্রত্যাখ্যান করে সিলেটে গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের মিছিল সমাবেশ

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ

 

১লা জুন সংসদে উত্থাপিত হয় ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট। সংসদে বাজেট উত্থাপনের সাথে সাথে তাৎক্ষণিক সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত প্রেস রিলিজের মধ্য দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)। আজ ২ জুন সিলেটে ঘোষিত বাজেটকে গণবিরোধী বলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখা।

শুক্রবার বিকেল ৫টায় সুরমা পয়েন্টে জমায়েত হয়ে মিছিল শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।

জেলা কমিটির সহ-সভাপতি সুরুজ আলীর সভাপতিত্বে এবং দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটুর পরিচালনায় বক্তব্য দেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) সিলেট জেলা কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবুল ফজল, সাধারণ সম্পাদক শাহীন আলম, শাহপরান থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির অর্থ সম্পাদক আব্দুস সালাম, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী, জাতীয় ছাত্রদল এমসি কলেজ শাখা নেতা বদরুল আজাদ, জেলা কমিটির অন্যতম সদস্য শুভ আজাদ (শান্ত),

বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি সিলেট সদর উপজেলা কমিটির অন্যতম নেতা আলী আহমদ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সরকার আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের নীতি নির্দেশে জাতীয় ও জনস্বার্থকে উপেক্ষা করে গতানুগতিক ধারায় সংসদে উত্থাপন করে ২০২৩-২৪ অর্থ-বছরের বাজেট। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে বরাবরই জাতীয় ও জনস্বার্থ বিরোধী বাজেট পেশ করে।

 

প্রতিবছর দেশের কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ জাতীয় ও জনস্বার্থের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো শুধু উপেক্ষিতই হয় না, সাম্রাজ্যবাদী প্রভুর স্বার্থে লগ্নিপুঁজি ও দালালপুঁজির সর্বোচ্চ মুনাফার হাতিয়ারে পরিণত হচ্ছে।

তারা বলেন, আমাদের দেশের বাজেট প্রণয়ন হয়ে থাকে লুটপাটের স্বার্থে। সরকার দলীয় এমপি-মন্ত্রী, নেতা-কর্মী, আমলারা যেন লুটপাটের এক মহোৎসবে মিলিত হন। যার ফলে জনগণের জাতীয় ও জরুরি সমস্যাগুলোর স্থান পায় না বাজেটে।

 

সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী যে খাদ্যসঙ্কট ও কর্মহীনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা মোকাবেলায় প্রয়োজন ছিল বাজেটে কৃষক ও কৃষি খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া, মূল্যস্ফীতি রোধ করা। কিন্তু বাজেটে তার জন্য কোন দিকনির্দেশনা নেই। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য কৃষি ভিত্তিক শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারেও কোন সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নেই। কৃষি খাতে যে অবৈধ মজুতদারি, বিপণনে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি তা মোকাবেলা কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেই।

 

তারা বলেন, বাজেটের ভর্তুকি কমাতে মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত দরিদ্র জনগণের উপর জবরদস্তি করে ভ্যাট-ট্যাক্সসহ বিভিন্ন ধরনের কর আদায় করা হবে। শিক্ষা উপকরণ, গৃহস্থালির সামগ্রী, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীসহ জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো হবে, যা ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়ে সামাজিক অস্থিরতাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। শেয়ার মার্কেট, অর্থ-পাচার রোধ, শিল্প কারখানা তৈরি সহ কোনো ধরনের নির্দেশনা নেই।

বক্তারা আরও বলেন, বর্তমানে যেখানে লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জনজীবন বিপর্যস্ত। সেখানে সরকারের বাজেটের আকার বৃদ্ধি করে ভ্যাট- ট্যাক্স, কর বাড়ানো জনগণের উপর “ মরার উপর খাড়ার গাঁ” হয়ে দাঁড়াবে।

 

অথচ সরকারের উচিত ছিল মানুষের দুঃখ কষ্ট লাঘবের জন্য প্রয়োজনীয় সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা মূলক পরিকল্পনা গ্রহণ করা। সামগ্রিক বিচারে এ বাজেট হচ্ছে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের শর্ত পূরণের বাজেট। উন্নয়ন, মেগা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের স্বার্থ রক্ষাকারী গণবিরোধী বাজেট।

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গণবিরোধী বাজেট প্রত্যাখ্যান করে ছাত্র-কৃষক, শ্রমিক-শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে গণমুখী বাজেট কার্যকর করার দাবি জানায়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।