নিজস্ব প্রতিবেদকঃঃ
কাজের উদ্দেশ্যে সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে কক্সবাজার গিয়ে ৬ দিন ধরে নিখোঁজ থাকা ৬ শ্রমিককে অপহরণকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিখোঁজের ছয় দিন পর গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাজারছড়া ১ নম্বর ওয়ার্ডের গহিন পাহাড় থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে ওই শ্রমিকদের কীভাবে অপহরণ করা হয়েছে এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত, সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত জানাননি।
তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করাও সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হবে বলে ওসি জানান।
সিলেটের জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্নাও জানিয়েছেন, উদ্ধার করা ৬ শ্রমিক বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন। তারা বর্তমানে টেকনাফ থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।
এর আগে গত ১৫ই এপ্রিল বিকেলে জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল গ্রামের ৬ শ্রমিক রাজমিস্ত্রী কাজের জন্য কক্সবাজার যান।
পরদিন ১৬ই এপ্রিল কক্সবাজার পৌঁছার পর সবাই তাদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কর্মস্থলে পৌঁছার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এরপর থেকে তারা ‘নিখোঁজ‘ ছিলেন বলে দাবি করেন তাদের পরিবার। এই খবরটি মঙ্গলবার সকাল থেকে সিলেটজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
নিখোঁজ থাকা শ্রমিকরা হলেন, পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ(২০),
ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১),
মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদি’র ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫)।
এ ঘটনায় ৬ শ্রমিক ‘নিখোঁজ‘ রয়েছেন জানিয়ে জকিগঞ্জ থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে তারা নিখোঁজের বিষয়ে কোনো সাধারণ ডায়েরি করেননি।
মৌখিকভাবে বিষয়টি আমলে নিয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধারের চেষ্ঠা শুরু করে। বিভিন্ন গণমাধ্যমও এই খবরটি গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার উপপরিদর্শক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, সিলেটের জকিগঞ্জের ৬ ব্যক্তি নিখোঁজের খবর পেয়ে টেকনাফ থানাপুলিশ অভিযানে নামে।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের রাজাছড়া এলাকার একটি পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় অপহরণকারীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ভিকটিমরা জানিয়েছে গত ১৫ই এপ্রিল বিকেলে রাজমিস্ত্রি কাজের জন্য চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে ডেকে নেন শফিউল্লাহ নামের এক ব্যক্তি।
পরে রাজমিস্ত্রি কাজের কথা বলে তাদেরকে অপহরণকারীদের হাতে তুলে দেয়।
তিনি আরও বলেন, অপহরণকারীদের পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এর আগে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার দাবি করে, নিখোঁজরা দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। ঈদের সময় কিংবা ওয়াজের মৌসুমে তারা বাড়িতে আসেন।
তাছাড়া সারা বছরই তারা চট্টগ্রামে রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। চট্টগ্রামের রশিদ ও বাবুল নামের ঠিকাদার তাদেরকে কাজের কথা বলে কক্সবাজারে নিয়ে গেছে।
এখন রশিদ ও বাবুল নামের ঠিকাদারের মোবাইল নাম্বারও বন্ধ রয়েছে। ওই দুই ব্যক্তি হয়তো নিখোঁজ হওয়া লোকদেরকে কিছু করেছে।