সুরমা টাইমস ডেস্ক :
ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্লট হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সাবেক সিটিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন বাংলাদেশের একটি আদালত।
গতকাল রোববার (১৩ই এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে বিচারক মোহাম্মদ জাকির হোসেন টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
রবিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলায় টিউলিপের খালা শেখ হাসিনা এবং তার মা শেখ রেহানার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
দুদকের অভিযোগ, টিউলিপ ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাবিত করার মাধ্যমে ঢাকার অভিজাত এলাকায় ৭২০০ স্কয়ার ফুটের একটি প্লট গ্রহণ করেছেন।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সন্তান এবং নিকটাত্মীয়দের মধ্যে অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জমি বরাদ্দ করেছেন—এমন অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক।
শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে আনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৪ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগ এবং অবৈধ উপায়ে রাষ্ট্রীয় জমি ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগগুলো ভিন্ন। তবে রূপপুর-কাণ্ডেও রয়েছে টিউলিপের নাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পদচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতি করার অভিযোগ উঠেছে টিউলিপের বিরুদ্ধে।
তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে বর্তমানে তিনটি অভিযোগের তদন্ত চলছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত জানুয়ারিতে সিটি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয় তাকে।
টেলিগ্রাফ জানায়, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের মাধ্যেমে জানেননি টিউলিপ। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে তিনি এ বিষয়ে অবহিত হন।
গতকাল রবিবার দুপুরে টিউলিপের একজন মুখপাত্র জানান, টিউলিপের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশপ্রণোদিত।
তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে দুদক টিউলিপের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনেছে, যেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং টিউলিপের আইনজীবীরা লিখিতভাবে সেগুলোর সমাধান চেয়েছেন।
কিন্তু দুদক এর কোনো উত্তর দেয়নি। তিনি আরো বলেন, ঢাকার আদালতে নিজের বিষয়ে কোনো শুনানি বা গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়ে অবগত ছিলেন না টিউলিপ।
এর আগে ১০ই মার্চ শেখ হাসিনা, টিউলিপ ও তার পরিবারের সদস্যদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করে দুদক।
পরে ওই আদালত শেখ হাসিনা, তার পেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ প্লট জালিয়াতিতে অভিযুক্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এদিকে রবিবার টিউলিপকে এমপি পদ থেকে পদত্যাগ এবং স্টারমারকে লেবার পার্টি থেকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছে কনজারভেটিভরা।
কনজারভেটিভদের একজন মুখপাত্র বলেছেন, স্টারমার এমন একজনকে দুর্নীতি দমন মন্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন, যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। অবিলম্বে তার এমপি পদ থেকে পদত্যাগ করা উচিত।
তিনি বলেন, এটা বেদনাদায়ক যে স্টারমার টিউলিপের জন্য তার পূর্বের পদে ফেরার পথ এখনো খোলা রেখেছেন। স্টারমারকে অবশ্যই টিউলিপের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব ও ঘনিষ্ঠতাকে একপাশে রাখতে হবে।
হান্টিংডনের টোরি এমপি বেন ওবেস-জেক্টি বলেন, স্টারমার আগেই মন্তব্য করেছিলেন যে তিনি টিউলিপকে পুনরায় স্বাগত জানাবেন। টিউলিপের আচরণ নিয়ে ক্রমাগত প্রশ্ন উঠলেও তিনি কিভাবে আগের ভূমিকায় ফিরতে পারেন?