সুরমা টাইমস ডেস্ক :
আমাদের শরীরের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি মিনারেলস হলো আয়রন। শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকা স্বাস্থ্যের পক্ষে কখনোই ভালো নয়।
শরীরে আয়রনের অভাব রয়েছে কি না, তা কয়েকটি চেনা লক্ষণ দেখলেই বুঝতে পারবেন। কিভাবে, চলুন জেনে নিই।
আয়রনের ঘাটতি বুঝবেন যেভাবে:–
আয়রনের ঘাটতি থাকলে পুরো শরীরে সঠিকভাবে অক্সিজেন ও রক্ত সরবরাহ হয় না। এর ফলে হাত-পা আচমকাই প্রচণ্ড ঠাণ্ডা হয়ে যেতে পারে।
যদি আপনার হাত-পা ঠাণ্ডা হওয়ার প্রবণতা মাঝে মাঝেই দেখা দেয়, তাহলে একবার আয়রনের মাত্রা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভালো।অনেক সময় আমাদের শরীরে অদ্ভুত কিছু জিনিস খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
অনেকেই দেখবেন মাটি খায়। বিশেষ করে মাটির ভাঁড়ে চা খাওয়ার প্রবণতা প্রবলভাবে দেখা যায় অনেকের মধ্যে। বরফ খেতেও দেখা যায় অনেককে। এগুলো কোনোটিই খাবার জিনিস নয়।
অথচ তীব্রভাবে এগুলোই খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা অনুভূত হয় শরীরে। এ জাতীয় লক্ষণ দেখা দিলে বুঝতে হবে শরীরে আয়রনের ঘাটতি রয়েছে।
আয়রনের অভাব শরীরে থাকলে সামান্য কাজ করেও প্রবলভাবে হাঁপিয়ে যাবেন আপনি। শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে। অল্প পরিশ্রমেই হাঁপ ধরে যেতে পারে।
এই জাতীয় উপসর্গ শরীরে বারবার দেখা দিলে সতর্ক থাকুন।
যেহেতু আয়রনের অভাবে অক্সিজেনের প্রবাহ সঠিক মাত্রায় বজায় থাকে না, ব্যাহত হয়। তার প্রভাবে আচমকা তীব্র মাথা যন্ত্রণা শুরু হতে পারে। এই লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হয়ে যান।
আয়রনের অভাব মানে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকবে। অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ত্বক মারাত্মক ফ্যাকাশে দেখাবে। মনে হবে যেন রক্তশূন্য চেহারা। যারা এমনিতেই ফর্সা, তাদের ক্ষেত্রে ত্বকের এই ফ্যাকাশে ভাব আরো বেশি করে চোখে পড়বে।
আয়রনের ঘাটতি নখের চেহারা নষ্ট করে দেয়। নখ হয়ে যায় ভঙ্গুর প্রকৃতির। একটু বাড়তে চায় না। ক্ষয় হয়ে যায় ভীষণভাবে। শুধু ক্যালসিয়ামের অভাব নয়, আয়রনের ঘাটতিতেও এইসব উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়।
আয়রনের ঘাটতি পূরণের উপায় :—
আয়রনের অভাব জনিত বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। খুব সহজেই সাধারন খাবার দিয়ে শরীরে আয়রনের অভাব পূরণ করা যায়। সেজন্য যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে সেগুলো প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখতে হবে যেমন-
মাছ-মাংস:-
গরুর মাংস, খাসির মাংস এবং কলিজা এ সকল খাবারে প্রচুর আয়রন রয়েছে। আবার মাছেও আয়রন রয়েছে যারা মাংস খেতে পারেন না সেক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় মাছ রাখতে পারেন। মাছের যে অংশে কলিজা থাকে সেই অংশে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। আমরা সবাই জানি যে বড় মাছে বেশি পরিমাণে আয়রন থাকে। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে ।
ডিম :-
ডিমের কুসুমে ও প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়।
ডাল :-
সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন যেমন ডাল, বিচ ইত্যাদি খাবারে আয়রন রয়েছে। কিন্তু এই খাবারগুলো গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।
বিভিন্ন রকম শাক সবজি:-
বিভিন্ন রকম শাকসবজি যেমন- কচু শাক, লাল শাক, পালং শাক, পুঁই শাক ইত্যাদি খাবারেও আয়রন আছে। তবে সবচেয়ে বেশি আয়রন বহন করে আনার, কলা, আপেল ইত্যাদি ফলগুলো। তাই এই ফলগুলো গ্রহণে শরীরে ভিটামিন সি এবং আয়রন দুটোই একসঙ্গে পাওয়া যায়।
এছাড়াও খেজুর , কিসমিস ইত্যাদি খাবারে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। তাই অন্যান্য খাবার গ্রহণের পাশাপাশি যদি আয়রন ও ভিটামিন সি যুক্ত ফলগুলো গ্রহণ করা যায় তাহলে রুচির পরিবর্তন হয় এবং খুব সহজেই আয়রনের অভাব পূরণ করা যায়।