সুরমা টাইমস ডেস্ক : নারী কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির অভিযোগে চৌগাছা থানার ওসি পায়েল হোসেনকে যশোর পুলিশ লাইনসে ক্লোজ করা হয়েছে। তিনি চৌগাছা থানায় মাত্র ৪৫ দিন আগে যোগদান করেন। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে টর্চার সেল, ঘুষ ও রিমান্ড বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, নিরিহ মানুষকে হয়রানি এবং নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠে। এসব অভিযোগের কারণে রোববার (২৯ ডিসেম্বর) তাকে যশোর পুলিশ লাইনসে ক্লোজ করা হয়েছে। একই সাথে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন যশোরের পুলিশ সুপার। পায়েল হোসেন গত ১৭ই নভেম্বর ঢাকার রমনা থানা থেকে বদলি হয়ে চৌগাছা থানায় যোগদান করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। সবশেষে ২৮শে ডিসেম্বর শনিবার সকাল থেকে ৫ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ওসি পায়েল একটি মোবাইলে কথা বলছেন আবার কখনো হাসতে হাসতে ওই নারীকে বিভিন্নভাবে অশালীন ইঙ্গিত দিচ্ছেন। এসময় তারা দু’জনই দু’জনকে উদ্দশ্যে করে ভিন্নি রকম অঙ্গভঙ্গি করছনে। অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রথম অভিযানে চৌগাছা বাস মালিক সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিনের বাড়ি সারা রাত অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং এক কোটি টাকা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেন। মাসিলা গ্রামের পারভেজ আহমেদ সোহাগ নামের এক যুবককে তুলে এনে ৩২ ঘণ্টা আটকে রেখে ইলেকট্রিক শক ও নির্যাতনের মাধ্যমে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা আদায় করেন। এরপরও তাঁকে ডাকাতি ও মাদক মামলায় আসামি দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেন।
২৩শে নভেম্বর সিংহঝুলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হামিদ মল্লিককে গ্রেপ্তার করে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন ওসি। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে চাঁদাবাজির মামলায় আদালতে পাঠানো হয়।
১৭ই ডিসেম্বর জীবন হোসেন লিপু এবং তাঁর বন্ধু বাবুলের ছোট ভাই হারিয়ে গেলে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। দুদিন পর ওসি বাবুলকে ডেকে নিয়ে জানান, হারানো ব্যক্তিকে উদ্ধারে অতিরিক্ত এসপির জন্য দুই লাখ টাকা লাগবে। নিরুপায় হয়ে বাবুল ৫০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে দেন। পরে ওই হারানো ব্যক্তিকে পরিবারের সদস্যরাই উদ্ধার করলেও ওসি টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবুল ও জীবনকে দালাল আখ্যা দিয়ে প্রচার প্রচারনা চালায়। এবং মোবাইল ফোনে গুলি করার হুমকি দিয়ে তাঁদের চৌগাছা ছাড়তে বাধ্য করেন। সবশেষ শনিবার সকালে তার অশ্লিল ভিডিও ভাইরাল হয়। অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে যশোরের পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘ওসি পায়েলের কর্মকান্ডে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) রুহুল আমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ অভিযোগের বিষয়ে ওসি পায়েল হোসেন বলেন, ‘আমাকে ফাঁসাতে একটি দালাল চক্র আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং আমাকে ট্যাপে ফেলা হয়েছে। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার’। (সুত্র -মানব জমিন)
- প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবাদ
- সিলেটে এক কমলা বিক্রি হলো ২ লাখ টাকায়!