মৌলভীবাজার-১ আসন : প্রার্থীদের কার বার্ষিক আয় কত?
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা ও জুড়ী) আসনে চারজন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে মাঠে নেমেছেন। তারা হলেন-আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী ও স্থানীয় সাংসদ মো. শাহাব উদ্দিন (নৌকা), জাতীয় পার্টির আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির মো. আনোয়ার হোসেন (সোনালী আঁশ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ময়নুল ইসলাম (ট্রাক)। সম্প্রতি এসব প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে হলফনামা দাখিল করেছেন।
হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী ও মো. শাহাব উদ্দিনের পেশা রাজনীতি। তবে রাজনীতি থেকে তাঁর বার্ষিক কোনো আয় নেই। অবশ্য কৃষিখাত থেকে তাঁর বছরে আয় হয় ৫০ হাজার টাকা।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রবাসী আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন বার্ষিক কোনো আয় নেই। তাঁর কাছে নগদ ১০ লাখ টাকা রয়েছে।
তৃণমূল বিএনপি প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেনের পেশা কৃষি হলেও এই খাত থেকে বছরে তাঁর কোনো আয় নেই। তাঁর কাছে নগদ আছে ২ লাখ টাকা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ময়নুল ইসলামের বিবাহ ও তালাক রেজিস্টার থেকে বছরে আয় হয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তাঁর কাছে নগদ আছে ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
মো. শাহাব উদ্দিন : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন উদ্দিন বিএ পাশ। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি হলফনামায় পেশা কৃষি হিসেবে উল্লেখ করলেও বর্তমানে তাঁর পেশা রাজনীতি। তবে এই পেশা থেকে তাঁর বছরে কোনো আয় নেই। কৃষিখাত থেকে তাঁর বছরে আয় হয় ৫০ হাজার টাকা। তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের বছরে চাকরি ও অন্যান্য পেশা থেকে আয় ৫ লাখ টাকা। তাঁর নামে কোনো মামলা নেই, অতীতেও ছিল না। তাঁর কোনো দেনা বা ঋণ নেই। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে শাহাব উদ্দিনের কাছে নগদ রয়েছে ২ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে নির্বাচনী হলফনামায় তিনি তাঁর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ দেখিয়েছিলেন ২২ লাখ ৭১ হাজার টাকা। বর্তমানে মন্ত্রীর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ টাকা। স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে ৯৭ হাজার ১৮৬ টাকা। তাঁর একটি জিপ গাড়ি রয়েছে। যার মূল্য ৮৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ৬০ হাজার টাকার আসবাব ও ইলেকট্রনিকসামগ্রী, একটি পিস্তল ও একনলা একটি বন্দুক রয়েছে, এগুলোর মূল্য ৪৭ হাজার টাকা। তাঁর স্ত্রীর নামে স্বর্ণালঙ্কার ও অন্যান্য সামগ্রী রয়েছে ২০ হাজার টাকার। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে মন্ত্রীর পৈত্রিক ও ক্রয়সূত্রে ১ লাখ টাকা মূল্যের কৃষি জমি আছে এবং ঢাকার উত্তরা এলাকায় তাঁর নামে ৩২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা মূল্যে অকৃষি জমি এবং যৌথ মালিকানার একটি বাড়ি রয়েছে। হলফনামায় নির্বাচনের আগে দেওয়া তাঁর চারটি প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করেছেন। এরমধ্যে বড়লেখা-জুড়ী উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন, ৮০ ভাগ গ্রামীণ রাস্তা পাকাকরণ, ৮০ ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো নির্মাণ এবং চলমান কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথের কাজ ৩০ ভাগ বাস্তবায়ন করেছেন বলে দাবি করেছেন।
আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন : প্রবাসী আহমেদ রিয়াজ উদ্দিনের শিক্ষাগত যোগ্যতা দশম শ্রেণি পর্যন্ত। তাঁর বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো মামলা নেই। অতীতে দুটি মামলা থাকলেও তা থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন। তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের আয় ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তবে তাদের আয়ের কোনো খাত তিনি উল্লেখ করেননি। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তাঁর কাছে নগদ ১০ লাখ টাকা আছে। ৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং ফ্রিজ ও টিভি রয়েছে। এছাড়া ৫ লাখ টাকা মূল্যের আসবাবপত্র রয়েছে। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে যৌথ মালিকানায় দালান (আবাসিক ও বাণিজ্যিক) এবং বাড়ি রয়েছে। তাঁর কোনো দায়দেনা নেই।
মো. আনোয়ার হোসেন : স্নাতক পাশ মো. আনোয়ার হোসেনের পেশা কৃষি। যদিও এই পেশা থেকে তাঁর বছরে কোনো আয় নেই। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলাও নেই। অতীতেও ছিল না। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তাঁর কাছে নগদ ২ লাখ টাকা আছে। স্ত্রীর নামে ৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। ইলেকট্রিক সামগ্রীর মধ্যে একটি ফোন রয়েছে। তাঁর স্থাবর সম্পত্তির কোনো সম্পত্তি নেই। কোনো দায়দেনা নেই।
মো. ময়নুল ইসলাম: শিক্ষাগত যোগ্যতা কামিল পাশ। পেশায় তিনি বিবাহ ও তালাক রেজিস্টার। এই পেশা থেকে বছরে তাঁর আয় হয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তাঁর কাছে নগদ ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৫১ হাজার ২৫০ টাকা। এছাড়া দুই ভরি স্বর্ণ এবং ফ্রিজ ও টিভিসহ আসবাবপত্র রয়েছে। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তাঁর নিজ নামে ১ দশমিক ২০ শতাংশ জমি এবং বাড়িতে তাঁর অংশ রয়েছে ১০ শতাংশ। তাঁর কোনো দায়দেনা নেই।