“নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হতাশা দূর করতে হবে”

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ

সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চিরতরে বন্ধসহ ২০১৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ৭দফা অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবীতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট মহানগর শাখার উদ্যোগে শনিবার নগরের ঐতিহাসিক শারদা হল প্রাঙ্গণে ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গণ অনশন ও গণ অবস্থান কর্মসূচী।

বক্তারা বলেন, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বর্তমান সরকারি দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যেসব প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন, তার সবগুলো সংবিধান স্বীকৃত, যৌক্তিক ও ন্যায়সংগত অধিকার। সংসদের চলমান অধিবেশনে আইন করে নির্বাচনী প্রতিশ্রæতি পূরণ করে সংখ্যালঘু ও জাতিগত সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরাজমান হতাশা দূর করতে হবে।

সংগঠনের মহানগর সভাপতি এডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দেব এর সঞ্চালনায় বক্তারা আরও বলেন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, দেবোত্তর বোর্ড গঠন ও দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন, পৃথক পৃথক বাংলাদেশ হিন্দু ফাউন্ডেশন, বৌদ্ধ ফাউন্ডেশন, খ্রিস্টান ফাউন্ডেশন গঠন অত্যন্ত ন্যায়সংগত ও যৌক্তিক দাবী।

 

পৃথিবীর কোন সভ্য ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচনী প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নের জন্য কোন আন্দোলন করতে হয় না। কিন্তু, দুঃখজনক ঘটনা যে, বাংলাদেশে নির্বাচনের প্রায় ৫ বছর অতিবাহিত হতে চললেও সরকার সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি একটিও বাস্তবায়ন করেনি। যার দরুন বাধ্য হয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রাস্তায় নেমে বিগত ৩ বছর থেকে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করছে। ২০২২ সালে ও দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সকাল-সন্ধ্যা গণ অনশন ও গণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। কিন্তু, সরকার তাতেও কর্ণপাত করেনি।

বক্তারা আরও বলেন, সংসদের চলমান চলমান অধিবেশনে নির্বাচনী প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়িত না হলে আগামী ৬ই অক্টোবর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা দেওয়া হবে।

বক্তারা বলেন, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ঘরে ফিরে যাবে না।

গণ অনশন ও গণ অবস্থানে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন-সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, জাসদের জেলা সভাপতি লোকমান আহমদ, বাসদের জেলা আহ্বায়ক আবু জাফর, সিপিবি জেলা সম্পাদক খায়রুল হাসান, জাসদের জেলা সম্পাদক কেএ কিবরিয়া চৌধুরী, সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল করিম চৌধুরী কিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবতোষ রায় বর্মণ,

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, সাংবাদিক আল আজাদ, গণতন্ত্রী পার্টির জেলা সভাপতি আরিফ মিয়া, সিটি কাউন্সিলর বিক্রম কর সম্রাট, সিলেট বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ মহানাম ভিক্ষু প্রমুখ।

আরও বক্তব্য রাখেন-বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মলয় পুরকায়স্থ, পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক রজত কান্তি ভট্টাচার্য, জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোপীকা শ্যাম পুরকায়স্থ, মহানগর সভাপতি রজত কান্তি গুপ্ত, মহানগর ঐক্য পরিষদের সহসভাপতি ডিকন নিঝুম সাংমা, সুব্রত দেব, বাগান ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা, পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা সম্পাদক এডভোকেট রঞ্জন ঘোষ, মহানগর সাধারণ সম্পাদক এপেক্সিয়ান চন্দন দাশ, অধ্যক্ষ ভাষ্কর রনজন দাশ, শৈলেন কর, বাবুল দেব, অ্যাডভোকেট দেবব্রত চৌধুরী লিটন, জি.ডি. রুমু, ধীরেন্দ্র ধর, পীযুষ কান্তি দে, বীর মুক্তিযোদ্ধা পান্না লাল রায়, বীরেশ দেবনাথ,

 

গৌরাঙ্গ পাত্র, নরেন্দ্র কুমার মহাপাত্র, যুগল কৃষ্ণ গোস্বামী, অশোক কপালী, এড. অরবিন্দ দাশ গুপ্ত বিভু, সঞ্জয় পাল, রেভারেন্ড ফিলিপ সমাদ্দার, অপরেশ দাশ অপু, সুজন লাল, নান্টু রনজন সিংহ, মনমোহন দেবনাথ, রথীন্দ্র দাস ভক্ত, দেবাশীষ গোয়ালা দেব, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিধান চন্দ্র দাশ, রিপন বৈদ্য, রাজকুমার পাল রাজু, এড. রন চন্দ্র দেব, ভৈরব দেবনাথ, অমৃত রাম ভট্টাচার্য, তাপস ভট্টাচার্য, দিলীপ রনজন কুর্মী, গোপাল সূত্রধর, রাম বাহাদুর, রজত চক্রবর্তী, মিলান ওরারও, শ্যামল দেব, নিশু বড়ুয়া, প্রদীপ ঘোষ, জয়ন্ত গোস্বামী, সিমসন ট্রামবুল, শ্যামল দে, নির্মল সিনহা, লিটন দেব, নন্দন পাল প্রমুখ।

 

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদের ৬ টি থানার নেতাকর্মীবৃন্দ। সন্ধ্যা ছয়টায় জল পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বিরাজ মাধব চক্রবর্তী মানস। গণ অনশন ও গণ অবস্থান কর্মসূচিতে সহস্রাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

 

এছাড়াও গণ অনশন ও গণ অবস্থানে গণসংগীত পরিবেশন করেন অংশুমান দত্ত অনজন, প্রতীক এন্দ টনি ও অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।