কানাইঘাটের আলোচিত কয়ছর মেম্বারের বিরুদ্ধে আবারো বলৎকারের মামলা

কানাইঘাট প্রতিনিধি:

কানাইঘাটের দিঘীরপার ইউনিয়নের সড়কের বাজার এলাকার নানা ঘটনার জন্য আলোচিত ও সমালোচিত সাবেক ইউপি সদস্য কয়ছর আহমদের বিরুদ্ধে আবারো থানায় একযুবককে বলৎকারের ঘটনায় মামলা হওয়ায় এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

 

এ ঘটনার পর থেকে স্থানীয় জয়ফৌদ কাজিরগ্রামের মৃত আজির উদ্দিনের পুত্র সড়কের বাজারের ব্যবসায়ী, এলাকার প্রভাবশালী কয়ছর আহমদ ও তার সহযোগি আশরাফ আহমদ গা ঢাকা দিয়েছে।

কানাইঘাট থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে জানা যায় উপজেলার উত্তর লক্ষীপ্রসাদ গ্রামের ২১
বছরের এক যুবক সড়কের বাজারের দিঘীরপার গ্রামে তার বোনের বাড়ীতে কয়েকদিন পূর্বে বেড়াতে গেলে কয়ছর আহমদ ও তার সহযোগি আশরাফ আহমদের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে কয়ছর আহমদ ঐ যুবককে ব্যবসা বানিজ্যের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য গত সোমবার রাত ৮টার দিকে সড়কের বাজারস্থ তার বাসায় ডেকে নেয়।

 

বলৎকারের শিকার ঐ যুবক কয়ছরের বাসায় যাওয়ার পর ব্যবসায়িক আলাপ আলোচনার নাম করে গল্পগুজব করতে থাকে। একপর্যায়ে রাত ১০ টার দিকে ভিকটিম ঐ যুবক কয়ছর আহমদের বাসা থেকে বের হয়। এতে আবারো কয়ছর আহমদ তার সহযোগিদের মাধ্যমে ঐ যুবককে পুনরায় তার বাসায় জোর পূর্বক ভাবে নিয়ে গিয়ে একটি কক্ষে আটক করে রাখে। রাত ২টার দিকে কয়ছর আহমদ ঐ যুবককে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দিলে সে রাজী না হলে কয়ছরের সহযোগি আশরাফ আহমদ ধারালো চাকু বের করে প্রানে হত্যার হুমকি দিয়ে ঐ যুবককে মারধর করতে থাকে। কথা বললে মেরে ফেলা হবে ইত্যাদি ভয় দেখিয়ে কয়ছর আহমদ জোর পূর্বক ভাবে ঐ যুবককে বলৎকার করে।

এরপর আশরাফ বলৎকার করার সময় কয়ছর আহমদ তার মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারন করে।
বলৎকারের ঘটনাটি কাউকে বললে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভিডিও ছেড়ে দেয়া হবে বলে ঐ যুবককে হুমকি দেয় এবং তার দু’টি মোবাইল সেট ও কিছু টাকা নিয়ে তারা বাসা থেকে বের করে দেয়।

এরপর বলৎকারের শিকার ভিকটিম ঘটনাটি ৯৯৯—এ ফোন দিয়ে পুলিশকে জানালে থানার টহলরত পুলিশের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়ছর আহমদের বাসায় হানা দেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কয়ছর ও তার সহযোগি আশরাফ সহ অন্যরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সমুহ অভিযোগ এনে বলৎকারের শিকার ঐ যুবক বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার কানাইঘাট থানায় কয়ছর আহমদ ও আশরাফের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন আসামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

থানার মামলা নং—৭, তাং—১২—৯—২৩ইং। মামলার তদন্তকারী কর্মকতার্ এসআই পীযূষ চন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন ভিকটিমকে পুলিশ হেফাজতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের
ওসিসি বিভাগে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।

থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম দস্তগীর আহমদ জানান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইসবুকে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর বলৎকারের ঘটনার আরো একটি মামলায় কয়েক মাস পূর্বে কয়ছর আহমদকে থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছিল।

সেই মামলায় জেল খেটে বেরি আসার পর গত সোমবার রাতে এক যুবককে ব্যবসা বানিজ্যের কথা বলে কয়ছর আহমদ তার বাসায় ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বলৎকার করেছে। মামলার আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে সাবেক ইউপি সদস্য কয়ছর আহমদ সড়কের বাজার এলাকার বহু অপকর্মের হুতা।

তার টচার্র সেলে আটক করে নিরীহ লোকজনদের বেধড়ক মারধর করে ভিডিও ধারণ এমনকি এক তরুনীকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক ভাবে বিয়ে এবং গত কয়েকমাস পূর্বে বলৎকারের আরো একটি ঘটনা ও ঘটে।

এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রত্যেকটি ঘটনার দায়ে তার বিরুদ্ধে
মামলা হলে সে জেল পর্যন্ত খেটেছে। এলাকায় নানা অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে সে জড়িত রয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।