কিংবদন্তি বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের জন্মদিন আজ
ডেস্ক রিপোর্টঃঃ
অসংখ্য জনপ্রিয় বাউল গান ও গণসংগীতের রচয়িতা বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১০৮তম জন্মদিন আজ। ১৯১৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা ইব্রাহিম আলী ও মা নাইওরজান।
দারিদ্র্য ও জীবন সংগ্রামের মাঝে বড় হওয়া বাউল শাহ আবদুল করিমের সংগীত সাধনার শুরু ছেলেবেলা থেকেই। শৈশব থেকেই একতারা ছিল তার নিত্যসঙ্গী। গানে ভাটি অঞ্চলের সুখ-দুঃখ তুলে এনেছেন শাহ আবদুল করিম। মানুষের জীবনের সুখ-প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি তার গান সব সময় অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কথা বলে। সাদাসিধে জীবন কেটেছে। বাউল ও আধ্যাত্মিক গানের তালিম নেন কমর উদ্দিন, সাধক রসিদ উদ্দিন, শাহ ইব্রাহিম মোস্তান বকসের কাছ থেকে।
দীর্ঘ সংগীত জীবনে বাউল ও আধ্যাত্মিক গানের পাশাপাশি ভাটিয়ালি গানেও তার দখল প্রবল। তিনি ১৬ শতাধিক গান লিখেছেন ও সুর করেছেন। বাংলা একাডেমির উদ্যোগে তার ১০টি গান ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। শরীয়তি, মারফতি, দেহতত্ত্ব, গণসংগীতসহ গানের অন্যান্য শাখার চর্চাও করেছেন তিনি।
তার কালজয়ী গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘আমি কুলহারা কলঙ্কিনী’, ‘গাড়ি চলে না চলে না’, ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’, ‘বন্দে মায়া লাগাইছে পিরিতি শিখাইছে‘, ‘বসন্ত বাতাসে’ ইত্যাদি।
শাহ আবদুল করিম ৬টি গানের বই লিখেছেন। এগুলো হলো- ‘আফতাব সঙ্গীত’, ‘গণসঙ্গীত’, ‘ধলমেলা’, ‘কালনীর ঢেউ’, ‘ভাটির চিঠি’ ও ‘কালনীর কূলে’।
দীর্ঘ সঙ্গীত জীবনে বাউল ও আধ্যাত্মিক গানের পাশাপাশি ভাটিয়ালি গানেও দখল ছিল তার। তিনি ১৬ শতাধিক গান লিখেছেন ও সুর করেছেন।
বাংলা একাডেমির উদ্যোগে তার ১০টি গান ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। লালন শাহ, পাঞ্জু শাহ, দুদ্দু শাহ, দুরবীন শাহর দর্শনে অনুপ্রাণিত ছিলেন আবদুল করিম। সঙ্গীতে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক। পেয়েছেন সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, সিলেট সিটি করপোরেশন নাগরিক সংবর্ধনা, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি, অভিমত, শিল্পকলা একাডেমি, খান বাহাদুর এহিয়া সম্মাননাসহ বহু পদক, সম্মাননা ও সংবর্ধনা।
২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সিলেটের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই গুণী শিল্পী। কিংবদন্তি এই বাউল সম্রাট স্বশরীরে না থাকলেও তার গান ও সুরধারা কোটি কোটি তরুণসহ সব স্তরের মানুষের মন ছুঁয়ে যায়। মৃত্যুর পর সর্বস্তরের মানুষের কাছে আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বাউল শাহ্ আব্দুল করিম।