স্টাফ রিপোর্ট:
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ের নদনদী ও প্রকৃতির ক্ষতিসাধন করে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনের দায়ে বিএনপির বহিস্কৃত দুই নেতাসহ ৩১জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট।
গতকাল মঙ্গলবার গোয়াইনঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট’র সহকারি পরিচালক মো. বদরুল হক।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি সংকটাপন্ন এলাকার সীমানা জাফলংয়ের ডাউকি ও পিয়াইন নদীর মধ্যবর্তী খাসিয়া পুঞ্জিসহ ১৪.৯৩ বর্গমিটারে পরিবেশ বিধ্বংসী এক্সকেভেটর নামীয় যন্ত্রদানব চালিয়ে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন করায় সিলেট জেলা বিএপির বহিস্কৃত সহসভাপতি ও সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য, গোয়াইনঘাট উপজেলার চৈলাখেল গ্রামের মঙ্গল মিয়ার ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম শাহপরান, ও জেলা বিএনপির বহিস্কৃত কোষাধ্যক্ষ, সাবেক উপজলো পরিষদ’র চেয়ারম্যান, জাফলং বাজার এলাকার মৃত হেলাল উদ্দিনের ছেলে মোঃ শাহ আলম স্বপনসহ একত্রিশ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ধারা ৫ লঙ্ঘনের দায়ে এই মামলাটি করা হয়।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন-ইয়াছিন মিয়া, শফিউল আলম সেলিম, মজির উদ্দিন, সাইদুর রহমান তামিম,
ছবেদ মিয়া, সালমান আহমদ সুরমান, মাসুক মিয়া, আমজাদ বক্স, নুরুল হক, আবুল কাশেম, মো: হাশেম,
মো: জামাল, সাইফুল ইসলাম মান্না, মুন্না মিয়া, মখই মিয়া, সাইমন, শুয়েব আহমদ, দুলাল মিয়া, কেনুু মিয়া,
মো: রায়হান, সুহেল মিয়া, রুহেল মিয়া, আতাউর রহমান, কুটিন মিয়া, মোঃ ইউসুফ, ফয়জুল ইসলাম, মিজানুর রহমান হেলোয়ার, সাজ্জাদ নুর, মোঃ রাশেদ মিয়া।
উল্যেক্ষ্য সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের বল্লাঘাট মন্দিরের জুম পাড় নামক স্থানে ঘটছে এহেন অবৈধ কর্মকান্ড।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই জাফলংয়ের পাথর কোয়ারীসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
শুধু জাফলং পাথর কোয়ারী থেকে প্রায় শত কোটি টাকার পাথর লুট হয়। পাথর লুট-পাটে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো.বদরুল হুদা বাদী হয়ে পৃথক-পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার প্রায় দীর্ঘিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে পাথর লুট-পাটকারী মামলার আসামীরা এখনো রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে। বরং তারা বেপরোয়া হয়ে জড়িয়ে পড়েছে পাথর লুটে। এর মধ্যে দিয়ে মামলা সহ তদবিরের খরচ সংগ্রহ তাদের উদ্দেশ্যে।
পতিত আওয়ামীলীগের দোস’র বিগত সময়ে জাফলংয়ে লুটপাট করে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট সরকার পতনের পর আশ্রয় নেয় স্থানীয় বিএনপির কিছু প্রভাবশালী নেতাদের ছায়াতলে। মোঠা অংকের আর্থিক দফারফায় পতিত দোসরদের আশ্রয় প্রশয় দিয়ে বেপরোয়া করে তুলেন বিএনপি নেতারা।
বিএনপি নেতাদের শ্লেটারে পাথর লুটের নায়করা এখন পুনর্বাসিত হয়ে চালিয়ে যাচ্ছে পাথর লুট সহ সীমান্তে চোরাচালানের মতো অবৈধ কর্মকান্ড।
এই কর্মকান্ডের নেপথ্য হোতা হিসেবে ছিলেন সিলেট জেলা বিএনপির নেতা ও গোয়াইনঘাট উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপন ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য বিএনপি নেতা মো.রফিকুল ইসলাম শাহপরান। ইতিমধ্যে তাদের বহিষ্কার করেছে বিএনপি।