সিলেটের গোয়াইনঘাটে সরকারি বরাদ্দের ঘর বিক্রির হিড়িক

রোকেয়া বেগম : সিলেটের গোয়াইনঘাট সারিঘাট নয়াখেল আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর সরকারি ঘর ক্রয়-বিক্রয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে । মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে উপজেলার  আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর হাতবদল হচ্ছে। সম্প্রতি উপজেলার লাফনাউট এলাকার  নয়াখেল গ্রামের আব্দুল হক এর পুত্র নুর উদ্দিন

নামে এক ব্যক্তি আশ্রয়ণের ঘর ক্রয়-বিক্রয়ের অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে এ অভিযোগ দিয়েছেন।

 অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে উল্লেখিত আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৪০ টি ঘর নির্মাণ করে উপজেলা প্রশাসন। ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য দেওয়া এসব ঘরের অধিকাংশ অনৈতিকভাবে বরাদ্দ পেয়েছেন যাদের জমি ও বাড়ি আছে সেসব ব্যক্তিরা। তাই তারা সেখানে বসবাস না করে উদ্বোধনের কিছুদিন পর থেকে শুরু করেন ঘর ক্রয়-বিক্রয়। জানা গেছে, মাত্র ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে প্রতিটি ঘর বিক্রি করা হচ্ছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, লাফনাউট এলাকার  নয়াখেল (বানই) গ্রামের ফয়জুল ইসলামের পুত্র জুয়েল আহমদ গত ১৮/০৫/২০২৩ ইং স্টাম্পের মাধ্যমে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর টিনসেডের বসতঘর লাফনাউট এলাকার  নয়াখেল গ্রামের আব্দুল হক এর পুত্র নুর উদ্দিনের কাছে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন যার স্টাম্প নং-৬৪৩৪৮২১। কিন্তু বর্তমানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সংস্কার করার সুযোগে বিক্রেতা জুয়েল আহমদ তার বসত ঘরটি নিজ নামে  নিয়ে প্রতারণা করছে বলে বসত ঘর ক্রয়কারী নুর উদ্দিন জানিয়েছেন।

একাধিক সুত্র জানায়, শুধু  জুয়েল নয় এরকম বেশ কয়েকটি ঘর ইতোমধ্যে স্টাম্পের মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে। আর এসব কিছুর মাস্টারমাইন্ড স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহীন আহমদ এমন অভিযোগ একাধিক ভুক্তভোগীর। এসব ঘর যাদের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল, তারা কেউ এখন এখানে নেই। যারা টাকা দিয়ে কিনেছেন তারাই এখন বসবাস করছেন।

এ ব্যাপার আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর সুবিধাভোগী ঘর বিক্রেতা জুয়েল আহমদের সাথে আলাপকালে তিনি জানান,আমি নুর উদ্দিনের কাছে বসত ঘর বিক্রি করি নি ভাড়া দিয়েছিলাম,  এখন সে আমার ঘর দখল করতে চায়।

এ ব্যাপারে কথা বলতে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহীন আহমদের মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শীর্ষেন্দু পুরকায়স্থ বলেন,বিষয়টি আমার জানা ছিল না, সরকারি বরাদ্দের ঘর কেউ বিক্রি করতে পারে না।

এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো সাইদুল ইসলামের সাথে কথা বলতে মোবাইল ফোন বার বার যোগাযোগ করা হলে উনি ফোন রিসিভ করেন নি।

এ ব্যাপারে নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না, এসব অপরাধের সাথে যারা জড়িত  তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন,বিষয়টি আমার জানা ছিল না,  খুজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।