শিবির নেতা থেকে নৌকার মাঝি, সেই ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
সুরমা টাইমস ডেস্ক : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন ইমাদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। ইমাদ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাবেক সেক্রেটারি। সেই থেকে স্থানীয় রাজনীতিতে তার পরিচিতি ছিল ‘নৌকা মাঝি শিবির নেতা’।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন ইমাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বাধা দেওয়া ও হামলার ঘটনায় একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা গেছে, ইকবাল হোসেন ইমাদ ছাত্রজীবনে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখা ইসলামী ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি ছিলেন। ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
ইসলামী ছাত্র শিবিরের দায়িত্ব পালনের তথ্য-প্রমাণসহ গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে পক্ষে-বিপক্ষে সংবাদ সম্মেলনও হয়। অভিযোগ ছিল, স্থানীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তালিকা উপেক্ষা করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মাধ্যমে তিনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগ তার মনোনয়ন প্রাপ্তিকে ‘অনুপ্রবেশ’ বলে অভিহিত করেছিল।
এমন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মধ্যে ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ইকবাল হোসেন ইমাদ তিন হাজার ৭২২ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শামস উদ্দিন শাহীন দুই হাজার ৫৯৫ ভোট পান। ভোটে জেতার পর ইকবাল হোসেন ইমাদ স্থানীয় রাজনীতিতে ‘নৌকার মাঝি শিবির নেতা’ ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচিতি পান।
পুলিশ সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সরকারের পক্ষে মাঠে সক্রিয় ছিলেন। আন্দোলনের বিরোধিতা করে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও সক্রিয় ছিলেন। আন্দোলনের বিরুদ্ধে নানা রকম পোস্ট দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে প্রচারণা চালান। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর ইকবাল হোসেন ইমাদ কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন। সোমবার উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে স্থানীয় সরকারের একটি সভায় অংশ নিয়ে ফেরার পথে গ্রেপ্তার হন।