পদ ছাড়তে রাষ্ট্রপতিকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

সুরমা টাইমস ডেস্ক :

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ করছেন ছাত্র-জনতা। তারা কর্মসূচি থেকে ঘোষণা করেন আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে।

একই দাবিতে ইনকিলাব মঞ্চ নামের আরও একটি সংগঠন আন্দোলন করছে।

গতকাল মঙ্গলবার (২২শে অক্টোবর) বিকেলে সাড়ে ৪টায় বঙ্গভবনের সামনে থেকে এই ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা।

 

বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার দোসর অ্যাখ্যা দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার (২২শে অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বঙ্গভবনের সামনে থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

২৪ ঘণ্টার আলটিমেটামে কাজ না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দেন বিক্ষোভকারীরা।

 

আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘আমরা চাই না তিনি রাষ্ট্রপতি পদে থাকুন। তাই আমরা তাকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছি তিনি যেন রাষ্ট্রপতির পথ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ না করেন তাহলে আমরা জানি তাকে কিভাবে পথ থেকে সরাতে হয়।’

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিজে আহত হয়েছেন জানিয়ে বাহার উদ্দিন বলেন, রাষ্ট্রপতি চুপ্পু যে পর্যন্ত তার পদ থেকে পদত্যাগ না করবেন সে পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না।

চুপ্পু একজন মিথ্যাবাদী। তিনি স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর। আমরা চাই না কোনো স্বৈরাচারের দোসর এই পদ থাকুক ।

 

ছাত্র আন্দোলনে নিজে আহত হয়েছেন জানিয়ে মো.সোহাগ বলেন, আমরা দেখতে চাই চুপ্পু কতদিন বঙ্গভবনে থাকতে পারেন। ছাত্র আন্দোলনের আহতরা পথে পথে আর দুর্নীতিবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর রাষ্ট্রপতি চুপ্পু কেন বঙ্গভবনে আরাম আয়েশ করবে।

 

এই রাষ্ট্রপতি ভারতের দালাল এবং তিনি শেখ হাসিনার দোসর। অবিলম্বে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে তাকে পদত্যাগ করতে হবে। তা না হলে কিভাবে বঙ্গভবনের ভিতর থেকে বের করতে হয় তা আমরা জানি।

এদিকে ইনকিলাব মঞ্চ নামের ব্যানারে আরেকটি সংগঠনের অর্ধশত লোকজন বঙ্গভবনের সামনে হাজির হয়ে বলেন, আমরা চাই বর্তমান রাষ্ট্রপতি যেন দ্রুত পদত্যাগ করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণের দাবিতে বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

 

ইতোমধ্যে বঙ্গভবনের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর এপিসি, জলকামান।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গভবনের সামনের মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও বক্তব্য দিচ্ছেন স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটির ব্যানারে আসা বিক্ষুব্ধ জনতা। পাশেই আরেকটি স্বৈরাচারের দোসর রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর পদত্যাগের দাবিতে ‘রক্তিম জুলাই-২০২৪’ ব্যানারে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করতে যায় অর্ধশত জনতাকে।

 

বঙ্গভবন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মো. ফারুক হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, বঙ্গভবন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য ডিএমপি থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 

সে অনুযায়ী বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন।

অপ্রীতিকর কিছু যাতে না ঘটে সেজন্য স্থানীয় থানা পুলিশের পাশাপাশি সেখানে সহযোগিতায় রয়েছেন সেনাবাহিনী ও র‍্যাবের সদস্যরা।

 

প্রসঙ্গত সম্প্রতি মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি বলেন, তার কাছে শেখ হাসিনার পদত্যাগসংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই।

 

এ নিয়ে সোমবার দিনভর নানা বিতর্ক ও সমালোচনা চলে দেশজুড়ে। এর পর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে রাষ্ট্রপতির পদে তার থাকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

অন্যদিতে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ডাকা গণজমায়েত থেকে।

 

ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন অ্যাখ্যা দিয়ে সরকারকে এ আলটিমেটাম বেঁধে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ।

তিনি বলেন, যে ছাত্রলীগের হাতে মানুষের মৃত্যু হয়েছে তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

 

উল্যেখ্য, ছাত্র-জনতার তোপের মুখে গত ৫ই আগস্ট পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি পালিয়ে যাওয়ার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।