‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ এজাজের মৃত্যু

সুরমা টাইমস ডেস্ক :

শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ওরফে ইমনের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হেজাজ ওরফে এজাজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। পুলিশ বলছে, শারীরিক অসুস্থতার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

গতকাল শনিবার (১৫ই মার্চ) সন্ধ্যায় ইফতারির সময়ে তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছন নিহতের বাবা শাহ আলম এবং ঢামেক পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মো. ফারুক। ঢামেক হাসপাতালে নিহত এজাজের ডায়ালাইসিস চলছিল বলে জানান তারা।

 

জানা যায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী এজাজ মারা যাওয়ার পরেই তারা পরিবারের সদস্যরা জোর করে হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ নিয়ে যায়।

 

পরে রাত ৯টায় দিকে মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসে তারা। তবে এব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নিহত এজাজের বাবা শাহ আলমের দাবি করে বলেন, ‘জামিনে থাকা সত্ত্বেও গত শুক্রবার (১৪ই মার্চ) রাতে ধানমন্ডির জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতাল থেকে এজাজকে ধরে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ।

 

পরে গতকাল শনিবার সকালে অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে আজ সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।’

তবে ডিবি হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ। ঢাকা মট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মোহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘এজাজ ডিবি হেফাজতে মারা যায়নি। কিছু দিন আগে গ্রেফতারের পর জামিনে বের হয় এজাজ।

এরপর থেকে তিনি ধানমন্ডির জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে ঢামেক হাসপাতালে রেফার করেন।

শনিবার ভোররাত ৪টা ৪০ মিনিটে তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় মারা যান এজাজ। যেহতু তার নামে মামলা রয়েছে, তাই ঢামেক হাসপাতালে তার সঙ্গে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ উপস্থিত ছিল।’

ডিবি সূত্রে জানা যায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ওরফে ইমনের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হেজাজ ওরফে এজাজকে গত শুক্রবার (১৪ই মার্চ) মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবির ওয়ারী বিভাগ।

 

পরে মিন্টু রোডে ডিবির প্রধান কার্যালয়ে এজাজ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে শনিবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

ডিবির ওয়ারী বিভাগের (ওয়ারী জোনাল টিম) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফজলুল করিম বলেন, “এ ব্যাপারে এখন ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলবো। এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।”

 

এরআগে গত ১০ই মার্চ (সোমবার) রাজধানীর রায়ের বাজার এলাকা থেকে এজাজকে গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী। পরদিন মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকালে তাকে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

পরেরদিন (বুধবার) আদালতের মাধ্যমে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। এরপর থেকে তিনি ধানমন্ডির জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন কারাভোগের পর গত ১৫ আগস্ট শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম, পিচ্চি হেলাল ও ইমনের সঙ্গে জামিনে মুক্তি পান এজাজ।

 

মুক্তির পর থেকেই তিনি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, অপহরণ ও হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। কিছুদিন আগে এলিফ্যান্ট রোডে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার উদ্দেশে গুলি ও কোপানোর ঘটনার মূল হোতা ছিলেন এজাজ।

 

এছাড়া মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড ও কলাবাগান এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করতেন তিনি।

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।