যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে ৪৩ দেশ !

সুরমা টাইমস ডেস্ক :

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে আগের চেয়েও কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছেন।

খসড়া তালিকা অনুসারে, ৪৩টি দেশের ওপর বিভিন্ন মাত্রায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। গত শুক্রবার (১৪ই মার্চ) নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের সুপারিশের ভিত্তিতে তৈরি খসড়া তালিকাকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।

 

প্রথম ভাগের দেশগুলোর ওপর সম্পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, দ্বিতীয় ভাগের দেশগুলোর ওপর নতুন ভিসা দেওয়া বন্ধ ও তৃতীয় ধাপের দেশগুলোকে ৬০ দিনের সময় দেওয়া হবে ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্বেগ দূর করতে।

নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় ৪৩টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করার কথা ভাবছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।

রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের আগের মেয়াদের চেয়ে নতুন এই নিষেধাজ্ঞার পরিধি বড় হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাতে মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস এমন খবর দিয়েছে।

কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এরইমধ্যে ‘লাল’, ‘কমলা’ ও ‘হলুদ’ এই তিন ক্যাটাগরিতে খসড়া তালিকা তৈরি করেছে। এতে তিনটি ধাপে ৪৩টি দেশের নাম রয়েছে।

তালিকায় প্রথম ধাপের ১১টি দেশ হলো- আফগানিস্তান, ভুটান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনিজুয়েলা ও ইয়েমেন। এসব দেশের নাগরিকদের পূর্ণাঙ্গ ভিসা বাতিল হতে পারে।

দ্বিতীয় ধাপের দেশগুলোর- বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান ও তুর্কমেনিস্তান। এসব দেশের ওপর আংশিক ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এসব দেশের পর্যটন ভিসা, শিক্ষার্থী ভিসা, অভিবাসন ভিসায় প্রভাব পড়তে পারে।

অর্থাৎ বিধিনিষেধ আরোপ হলেও এসব দেশের ভিসা পুরোপুরি বাতিল করা হবে না। এই ১০ দেশের ধনী ব্যবসায়ীরা ভ্রমণ করতে পারলেও ভ্রমণ কিংবা অভিবাসন ভিসায় সাধারণ নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবেন না।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর ভ্রমণকারীদের যথাযথভাবে যাচাই করা কঠিন হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক নাগরিকদের পাসপোর্ট ও পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকায় এসব দেশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে।

 

তবে, এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। বিশেষ করে, ভুটানকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

 

কারণ দেশটি শান্তিপূর্ণ এবং নিরাপদ বলে পরিচিত। এছাড়া রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলার মতো দেশগুলো অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ।

 

জানা গেছে, ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে ক্ষমতাগ্রহণের পর কোন কোন দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত তার একটি তালিকা করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

 

এজন্য পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের ৬০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। অর্থাৎ, সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এর মধ্যেই নিষেধাজ্ঞার চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করবে প্রশাসন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।