গোয়াইনঘাটে ভারতীয় চোরাই গরুর বৈধতার রসিদ দিচ্ছে ইয়াবা ব্যাবসায়ী আমিন সিন্ডিকেট
নিজস্ব প্রতিবেদকঃঃ
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার হাদারপার বাজারে ভারতীয় চোরাই গরুর বৈধতার রসিদ দিচ্ছে ইয়াবা ব্যাবসায়ী ও একাধিক মাদক মামলার আসামী আমিন সহ একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট। এর আগে এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছিলো আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ। বর্তমানে শুধু সিন্ডিকেট পরিবর্তন হয়েছে। বন্ধ হয়নি চাঁদাবাজি।
অভিযোগে প্রকাশ, গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি ও লাখাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ভারতীয় চোরাই গরু দেশে প্রবেশ করছে। এসকল ভারতীয় গরু বৈধ করার জন্য প্রথমে নেওয়া হয় হাদারপার বাজারে।
সেখান থেকে ২ হাজার টাকা নিয়ে রসিদ দিয়ে বৈধ করে দিচ্ছেন নতুন একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট।
সিন্ডিকেট সদস্যরা হলো সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার উপরগ্রাম হাদারপারের কুখ্যাত মাদক ব্যাবসায়ী আমিন আহমদ, আলী আহমদ, গোলাম হোসেন, আব্দুল খালিক, আশরাফ, ডিবির লাইনম্যান হিসেবে পরিচিত নূরুদ্দিন ওরফে নূরু, নূরুর ভাগ্না ও আলী আহমদের জামাতা মোশারফ, ও তাদের সহযোগী একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
এই চক্রের দেয়া রসিদ নিয়ে প্রকাশ্যে অবৈধ ভারতীয় চোরাই গরু থানা পুলিশের সামন দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে নেয়া হয়ে থাকে।
আর এই আমিন; আলী সিন্ডিকেটের প্রধান আমিন হাদারপার গ্রামের মৃত তজমুল আলীর ছেলে ।
অল্প বয়সেই মাদক সেবন ও বিক্রির সাথে জড়িয়ে পড়েন আমিন আহমদ।তার নিজ এলাকায় ইয়াবা সম্রাট হিসেবেই আমিনের পরিচিতি ।
নিজ বাড়ীতেই মাদকের হাট পরিচালনা করতেন আমিন আহমদ। আলী ও আমিন চাচাতো ভাই হবার সুবাদে দুই ভাই মিলে পরিচালনা করতেন মাদক ব্যাবসা । এরই ধারাবাহিকতায় দুই ভাই মিলে পরিচালনা করছেন অবৈধ ভারতীয় গরুর চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট ।
আমিন এর উপর ৫ টি মাদক মামলা ও ১ টি পুলিশ এসল্ট মামলা, এবং ১ টি ডাকাতি মামলা রয়েছে, তারমধ্যে কিছু মামলায় খালাস পেলে ও একাধিক মামলা এখনো বিদ্যমান। এবং এলাকায় কুখ্যাত ইয়াবা ব্যাবসায়ী হিসেবে তার একক পরিচিতি রয়েছে।
গত ২৬ শে আগষ্ট গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে সাত টি ডি আই পিকআপ ভর্তি অবৈধ ভারতীয় চোরাই গরু আটক করা হয় সেখানে একটি চোরাই গরুর গাড়ীর মালিক এই আমিন ।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গরু ব্যবসায়ী বলেন, আমরা নিরুপায় হয়ে তাদেরকে অধিক টাকা দিয়ে এই ব্যবসা করছি।
বাজারের ইজারাদার লিয়াকত আলী তিনি কখনও বাজারে আসেন না। উনার নামেই এসকল গরুর রসিদ আমাদের দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিন্ডিকেট প্রধান আমিন আহমদের সাথে তার ব্যাবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি গরু চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন। এবং গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের সাবেক ও বর্তমান দায়িত্বশীল দুই সাংবাদিকের নাম উল্ল্যেখ করে বলেন এই দুই সাংবাদিক নেতা সাংবাদিক মহল সামাল দেন ।
মাদক ব্যাবসা ও মাদক মামলা নিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি এখন ব্যাস্ত আছেন এই বলে ফোনকল কেটে দেন।
এ বিষয়ে জানতে আমিন আহমদের চাচাতো ভাই আলী আহমদের মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সম্পূর্ণ বিষয়টি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেন। এবং গরু বজারের পাঁশে তার ফার্ণিচার দোকান রয়েছে বলে উল্ল্যেখ করে তিনি ব্যাবসার কাজে ব্যাস্ত আছেন বলে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
পরবর্তীতে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি আর মোবাইল রিসিভ করেন নি ।
এ বিষয়ে জানতে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করতে উনার মোবাইলফোনে একাধিকবার কল দিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
এসব বিষয়ে জানতে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমেদ এর সরকারি মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে তিনিও কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি।