হুদাইবিয়া সন্ধির শিক্ষা থেকে সংকট সমাধানের পথ খুঁজে নিন -মুসলিম লীগ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ
আজ (৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩) বাদ যোহর বাংলাদেশ মুসলিম লীগ আয়োজিত, দলের নির্বাহী সভাপতি আবদুল আজিজ হাওলাদারের সভাপতিত্বে পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে নেতৃবৃন্দ বলেন, শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) শুধু একজন ধর্ম প্রচারকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন ৬২২ খৃষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত মদিনা কেন্দ্রিক মুসলিম রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্র প্রধান, মুসলিম সেনাবাহিনীর প্রথম প্রধান সেনাপতি এবং প্রধান বিচারপতি।
৬২৪ খৃষ্টাব্দে তার নির্দেশনায় প্রণীত হয় বিশ্বের প্রথম লিখিত রাষ্ট্রীয় সংবিধান মদিনা সনদ যা সকল ধর্ম বিশ্বাসীর জন্য সম অধিকার ও ন্যায় বিচারের অঙ্গীকারসহ হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর রাজনৈতিক দূরদর্শিতার এক উজ্জ্বল দলিল।
৬২৮ খৃষ্টাব্দে মক্কার পৌত্তলিক কুরাইশদের সঙ্গে হুদাইবিয়া সন্ধি করে তিনি অসামান্য কূটনৈতিক প্রজ্ঞার নিদর্শন রাখেন। ৬৩০ খৃষ্টাব্দে বিনা যুদ্ধে ও বিনা রক্তপাতে মক্কা বিজয় মুসলিম সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর সামরিক কূটনীতির অনন্য কৃতিত্ব যা বিশে্বর সমর ইতিহাসে বিস্ময়কর এক ঘটনা রূপে স্বীকৃত।
রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পরম্পরা লিপ্ত থাকা শত শত গোত্রে বিভক্ত মরুচারী দুর্ধর্ষ বেদুঈন যাযাবরদের এক পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ করে তিনি এক জাতিতে পরিণত করার অবিস্মরণীয় কৃতিত্বের অধিকারী, যা মানব ইতিহাসের বিস্ময়।
যে কোন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপ্রধানরা নবীজির জীবনীর ভেতরই রাজনৈতিক সমাধানও খুঁজে পাবেন। দেশ ও জাতির কল্যাণে বর্তমান টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে হুদাইবিয়ার সন্ধি থেকে শিক্ষা নিয়ে ক্ষমতাসীনদেরকে রাজনৈতিক সংকটের সমাধান খুঁজে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন অমুসলিম গবেষক ও রাজনীতিবিদ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে নবী স্বীকার না করলেও তারা সকলেই অকপটে স্বীকার করেছেন যে, তিনি মহাপুরুষ, রাজনীতিক বাগ্মী, দার্শনিক, ব্যবসায়ী, ধর্ম প্রচারক, সফল সেনাপতি, দক্ষ যোদ্ধা, সুশাসক, সিদ্ধপুরুষ, বর্ণপ্রথা বিলুপ্তকারী, যুগ সংস্কারক, অনাথের আশ্রয়দাতা, ক্রীতদাসের মুক্তিদাতা, নারীদের অধিকার প্রদানকারী, আইন প্রণেতা, ন্যায় বিচারক ইত্যাদি। অন্য ধর্মাবলম্বীরাও ব্যক্তি হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর সততা, উদারতা, মানবতা, শাসন ও বিচারে নিরপেক্ষতা ইত্যাদি গুণাবলীর প্রশংসা করতে কার্পণ্য করেননি। তাদের কাছে, তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ রূপেই স্বীকৃত হয়ে আছেন। ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ইত্যাদি ক্ষেত্রেই হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম সফলকাম ব্যক্তি রূপে গণ্য করা হয়। নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্ব জগতের প্রতি রহমত স্বরূপ প্রেরিত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে শুধু একজন নবী ও ধর্ম প্রচারকের গণ্ডিতে আবদ্ধ না রেখে তার সার্বজনীন শিক্ষা এবং তার রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনাচারকে অনুসরণ করলে তা হবে বিশ্ব মানবের জন্য কল্যাণের, সমৃদ্ধির, স্বস্তির এবং নিরবচ্ছিন্ন শান্তির। আলোচনা শেষে নবীজির প্রতি দরূদ পাঠসহ মুসলিম বিশ্বের ঐক্য ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়।
আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন, দলীয় মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, স্থায়ী কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন আবুড়ী, সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম, এড. আফতাব হোসেন মোল্লা ও সৈয়দ আব্দুল হান্নান নূর, অতিঃ মহাসচিব আকবর হোসেন পাঠান, কাজী এ.এ কাফী, কেন্দ্রীয় নেতা শেখ এ সবুর, এড. হাবিবুর রহমান, খোন্দকার জিল্লুর রহমান, মোঃ সলিমউল্ল্যাহ, ছাত্রনেতা মোঃ নুরুল আলম, মোঃ নুরুজ্জামান প্রমুখ।