ধর্ষণ মামলার আসামী জয়নুল অধরা, গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ

সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীরামসি গ্রামের ১০ বছর বয়সী ৪র্থ শ্রেণীর মাদ্রসা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযুক্ত আসামী একই গ্রামের মৃত সুন্দর আলী পুত্র এক কন্যা সন্তানের জনক জয়নুল ইসলাম (৪০) কে দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে মাদ্রাসা শিক্ষক ও এলাকাবাসী।

রবিবার সকাল ১১টায় জগন্নাথপুর পৌরসভা চত্তরে ২ ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে মদিনাতুল উলুম শ্রীরামসি মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা ফুজায়েল আহমদের পরিচালনায় ও সানজিদা নাসরিন ডায়নার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা ওলীউর রহমান,মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান,জগন্নাথপুর পৌর সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সালিক আহমেদ,নারীপক্ষ,দূর্বার নেটওয়ার্কের সভাপতি জাকিয়া সুলতানা,মানবাধিকার কর্মী সানি বখৎ,অনিক আহমেদ,ফয়সাল আহমেদ,ধর্ষন মামলার বাদী রিনা বেগম,,মঞ্জিল আহমদ,ফারহান আহমেদ,রোজিনা বেগম,নাহিদ আহমেদ,সাবিনা বেগম,শামীম আহমেদ সহ এলাকার সুশীল নাগরিকবৃন্দ।

মানববন্ধনে ভিকটিম শিশুর শিক্ষক মাওলানা ফুজায়েল ও মাওলানা ওলীউর রহমান বলেন, অত্যান্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমরা দাঁড়িয়েছি,আমাদের মাদ্রাসার খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী ৪র্থ শ্রেণীতে পড়াশোনা করতো। তাকে নির্মম ভাবে যেভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে তা খুবই মর্মান্তিক। আমরা তার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। বিগত ৪ মাস হয়ে গেছে এখনো পর্যন্ত আসামীকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। আমরা চাই আর কোনো ছাত্রী যেনো এরকম নরপশুদের হাতে শেষ না হয়। অনতিবিলম্বে এই ধর্ষককে গ্রেফতার করে যেনো সর্বচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়।

এসময় জগন্নাথপুর পৌর সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সালিক আহমেদ বলেন, আমরা আজ এখানে মানববন্ধনের আয়োজন করেছি ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে। আমি অনুরুধ করবো প্রশাসন সহ গোয়েন্দা সংস্থা থেকে শুরু যত সোর্স আছে সবার কাছে এই আসামী জয়নুল ইসলাম কে যেনো দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তি নিশ্চিত করা হয়।
ভিকটিম শিশুর মা বলেন, আমি আসামী জয়নুলের শাস্তি চাই। আমার বাচ্চার ভবিষ্যত অন্দকার। পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু আজো আসামীকে আইনের আওতায় আনা হয়নি। আমি প্রশাসনের কাছে দাবী জানাই, আসামীকে গ্রেফতার করে ফাঁসি দেওয়া হউক।

সানজিদা নাসরিন দিনা বলেন, যতক্ষণ এই ধর্ষক জয়নুলকে আইনের আওতায় আনা হবেনা ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। সারা বাংলাদেশে আমরা মানববন্ধন করবো। এই আসামীকে দ্রুত গ্রেফতার করা হউক।
জগন্নাথপুর উপজেলার সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল কর্মকর্তা সুভাশীষ ধর বলেন, আমরা পুলিশ প্রশাসন সহ প্রতিটি সোর্স তাকে গ্রেফতার করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য যে, মাদ্রাসাছাত্রীর বাড়ি ও মামার বাড়ি উপজেলার একই গ্রামের পাশাপাশি এলাকায়। সকালে মায়ের কথায় সে মামার বাড়ি থেকে শুঁটকি আনতে যায়। বাড়ি ফেরার পথে জয়নুল নামের ওই ব্যক্তি তাকে তুলে নিয়ে এলাকার একটি পুকুরপাড়ে যান। সেখানে তাকে ধর্ষণ করে বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেন। বাড়ি যাওয়ার পর শিশুটি কান্নায় ভেঙে পড়ে তার মাকে বিষয়টি জানায়। পরে শিশুটিকে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠান। ৩১ মে ভিকটিমের মা রিনা বেগম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালে একটি মামলা দায়ের করেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।