Surma Times | Sylhet News

সিলেটের প্রথম অনলাইন সংবাদ পোর্টাল

কানাইঘাট লোভাছড়া কোয়ারীতে জব্দকৃত কোটি ঘনফুট পাথরের মাপযোগ শুরু

৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল কোয়ারীতে:

 

কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ

 

দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী লোভাছড়া পাথর কোয়ারীর দু’তীরে জব্দকৃত প্রায় ১ কোটি ঘনফুট পাথরের অচল অবস্থার অবসান হতে যাচ্ছে। জব্দকৃত পাথরের মাপযোগের কাজ শুরু হয়েছে।

রবিবার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)র ০২/০৩/২০২৩ইং তারিখের অফিস আদেশের প্রেক্ষিতে লোভাছড়া পাথর কোয়ারিতে জব্দকৃত প্রায় ১ কোটি ঘনফুট পাথর হতে (রিট মামলার আওতা বহিভূর্ত) পাথরের পরিমাণ ও গুনাগুণ বিবেচনায় নিলামের ভিত্তি মূল্য নির্ধারনের জন্য প্রতিনিধি দল কাজ শুরু করেছেন।

রবিবার দুপুরে প্রতিনিধি দলের আহ্বায়ক খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)র পরিচালক (যুগ্মসচিব) মোঃ আবুল বাসার সিদ্দিক আকন ও সদস্য সচিব খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)’র উপপরিচালক (খনি ও খনিজ) (চ. দা.) মোঃ মাহফুজুর রহমান এর নেতৃত্বে ৮ সদস্যের কমিটি প্রথম দিনে কোয়ারী এলাকা পরিদর্শন করে জব্দকৃত পাথরের স্তুপগুলো ঘুরে ঘুরে দেখন এবং পরিমাপের কাজও প্রত্যক্ষ করেন। প্রতিনিধি দল ৫ এপ্রিল পর্যন্ত কোয়ারী এলাকায় অবস্থান করে জব্দকৃত পাথরের পরিমাপ কাজের তদারকি করবেন বলে জানা গেছে।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ তৌছিফ আহমেদ, কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন্ত ব্যানার্জি, বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি)র উপ—পরিরচালক (ভূতত্ত্ব) মোঃ আশরাফ হোসেন, কানাইঘাট সার্কেলের এসএসপি মোঃ আব্দুল করিম, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের এর একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি, পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ আলমগীর।

প্রতিনিধি দল রিট মামলার আওতা বহিভূর্ত পাথরের পরিমাণ ও গুনাগুণ বিবেচনায় নিলামের ভিত্তি মূল্য নির্ধারন পূর্বক আগামী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে বিএমডিতে প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি জানিয়েছেন।

প্রসজ্ঞত যে, প্রায় ৪ বছর পূর্বে লোভাছড়া পাথর কোয়ারীর ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কোয়ারীর দু’তীরে অবস্থিত প্রায় ১ কোটি ঘনফুট পাথর জব্দ করে সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর। পাথর ব্যবসায়ীরা জব্দকৃত পাথরগুলো নিজেদের উত্তোলনকৃত পাথর বলে মহামান্য হাইকোর্ট ব্রেঞ্চ সহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দাখিল করেন, কিন্তু কোন প্রতিকার পাননি তারা।

 

পাথর জব্দ করার পর পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট তিন দফা নিলামে পাথর বিক্রির দরপত্র আহ্বান করলে এ নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টে নিলামকারী একজন সহ কয়েকজন পাথর ব্যবসায়ী বিভিন্ন অভাব অভিযোগ তুলে মহামান্য হাইকোর্টে রিট মামলা করেন। যার কারনে প্রায় ৪ বছর ধরে লোভাছড়া পাথর কোয়ারীতে পড়ে থাকা এক কোটি ঘনফুট পাথরের নিলাম প্রক্রিয়া বিলম্বিত হলে জব্দকৃত পাথরের দেখাশোনার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

দীর্ঘদিন পর জব্দকৃত এ পাথরগুলো সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে পরিমাপ ও গুনাগুণ বিবেচনা করে নিলামের মূল্য নির্ধারনের কাজ শুরু হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত শতশত পাথর ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে কোয়ারীতে কাজের সাথে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিকদের মধ্যে আশার আলো দেখা দিয়েছে।

পাথর ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন অন্তত নিলামের মাধ্যমে জব্দকৃত পাথরগুলো বিক্রি হলে তারা কিছুটা হলেও ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন এবং দ্রুত পাথর নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য সরকারের সর্বোচ্চ মহলে সহযোগিতা কামনা করেন তারা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।