সিলেটে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর,বাটার শোরুমে লুটপাট: আটক ৩

স্টাফ রিপোর্টার::

ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান দাবি করে সিলেট নগরীর মিরবক্সটুলা অবস্থিত কেএফসি রেস্টুরেন্ট, ডমিজন পিজ্জা ও দরগাহ গেইটে অবস্থিত বাটার শো’রুম ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।

 

এ সময় রেস্টুরেন্টের ভিতরে থাকা ইসরায়েলি বিভিন্ন কোমল পানীয় নষ্ট করা হয়। এঘটনার পর প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।

 

গতকাল সোমবার (৭ই এপ্রিল) বিকাল ৩টায় এ ঘটনা ঘটে।  খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জনতাকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।

 

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের গণহত্যাকারী ইসরায়েলি কোন প্রতিষ্ঠানের ঠাঁই হবে না এ দেশে। এই কেএফসি রেস্টুরেন্টে ইসরায়েলি বিভিন্ন কোমল পানীয় বিক্রি করা হচ্ছে। বাটা ইসরায়েলি পণ্য দাবি করে করেন তারা।

 

ফিলিস্তিনি ভাইদের রক্ষা করতে বাংলাদেশের কোটি কোটি জনতা প্রস্তুত রয়েছে। চলমান হামলা শুধু একটি অঞ্চলের নয়, সমগ্র মুসলিম বিশ্বের প্রতি আঘাত। এই অমানবিকতা বন্ধে বিশ্ব নেতাদের এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

এর আগে নগরীর বিভিন্ন জায়গা থেকে দলে দলে মিরবক্সটুলা, চৌহাট্রা, দরগাহ গেইটে এসে জড়ো হতে থাকেন।

তবে মিছিল শেষে কেএফসি রেস্টুরেন্ট, বাটার শো-রুমসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠেছে বিভিন্ন মহলে। ঘটনার ফুটেজ দেখে গতকাল সোমবার (০৭ই এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে অভিযানে নামে পুলিশ।

দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ভাঙচুর লুটপাটে জড়িত তিন যুবককে আটক করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।

আটকৃতরা হলেন—সুনামগঞ্জের দিরাই থানার রাজা মিয়ার ছেলে মো. রাজন (২০), সুনামগঞ্জ সদর থানার হাছানগর গ্রামের আরব আলীর ছেলে ইমন (১৯), কোতোয়ালী থানাধীনর কাজিটুলা এলাকার দ্বীন ইসলামের ছেলে মো. রাকিব (১৯)।

এসএমপির কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক বলেন, গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার (৭ এপ্রিল) সিলেটে তৌহিদি জনতার ব্যানারে দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ উৎসুক জনতার ভিড়ে কাউকে আটক করতে পারেনি।

পরে সোস্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমের বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে জড়িতদের আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটক করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, বাটার শো-রুম থেকে লুটপাট করা জুতা সাইজে ছোট-বড় হওয়ায় রিফাত নামে এক যুবক ফেসবুকে বিক্রির জন্য স্ট্যাটাস দেন। তাকে এখনো আটক করা যায়নি বলে জানিয়েছেন ওসি জিয়াউল।

মো. জিয়াউল হক জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে আর যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সেজন্য বাড়তি নজরদারি রয়েছে। মাঠে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

এব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম বলেন, গাজায় চলমান হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সিলেটের তৌহিদি জনতা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে।

আমরা পুলিশ প্রশাসন সেই শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি বাস্তবায়নে মুসল্লিদের সহযোগিতা করেছি। হঠাৎ পেছন থেকে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ কেএফসিসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে কেএফসির গ্লাস এবং ভেতরে প্রবেশ করে ফার্নিচার ও মালামাল ভাঙচুর চালায়।

আমরা বিক্ষুব্ধ জনতাকে সেখান থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং শান্তিপূর্ণ রয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।