সিলেটে একাত্তর ও চব্বিশের যোদ্ধাদের সম্মান জানালো সেনাবাহিনী

সুরমা টাইমস ডেস্ক :

সিলেটে একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ২৪’র জুলাই আগস্ট যোদ্ধা এবং পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা জানালো সেনাবাহিনী ১৭ পদাতিক ডিভিশন।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গতকাল বুধবার (২৬শে মার্চ) বিকেলে জেলা স্টেডিয়ামে সিলেট অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের সম্মানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশন ও সিলেট এরিয়ার তত্ত্বাবধানে একযোগে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জ জেলায় কেন্দ্রীয় ইফতারের আয়োজন করা হয়।

এর মধ্যে সিলেট জেলার কেন্দ্রীয় ইফতারে যোগদেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি), ১৭ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার, সিলেট এরিয়া মেজর জেনারেল আ স ম রিদওয়ানুর রহমান, এডব্লিউসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, জি।

তিনি অতিথিদের সাথে মতবিনিময় এবং আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঈদ উপহার প্রদান করেন।

এসময় শাহাদাৎ বরণকারী মুক্তিযোদ্ধা ও জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের রুহের মাগফিরাত, আহতদের পরিপূর্ণ সুস্থতা এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

অনুষ্ঠানে এই অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা ও জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ, সিলেট এরিয়ার উর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় অসামরিক প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দলনের স্থানীয় সমন্বয়কবৃন্দ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

 

জিওসি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ৫৪ বছর পূর্বে এই দিনে স্বাধীনতার ডাকে সাড়া দিয়ে দল-মত নির্বিশেষে সেনাবাহিনীসহ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ও লাখো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতা, যার মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

স্বাধীনতার প্রায় ৫৩ বছর পর ২০২৪ এর জুলাই-আগস্ট জাতির ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক। এসময় স্বাধীন রাষ্ট্রের বহুদিনের বিস্তৃত পরাধীনতার শেকড় উপড়ে ফেলার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে জুলাই -আগস্ট যোদ্ধারা।

সাম্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত হিসেবে পথপ্রদর্শন করেছে এ সময়ের নায়কেরা। দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় সিলেটে এ আন্দোলনের সময় শাহাদাত বরণ করছে ১২ জন এবং আহত হয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণীর শত শত ছাত্র-জনতা।

তিনি বলেন, ‘আজকের এই শুভক্ষণে আমি সত্যিই আনন্দিত, দুই পৃথক সময়ের প্রবীণ ও নবীন কিংবদন্তিদের সাথে একত্রিত হতে পেরে। জাতি আপনাদের আত্মত্যাগ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এবং ভবিষ্যতেও করবে।’

 

তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, আপনাদের ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ নতুনভাবে এগিয়ে যাবে এবং সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণে সমর্থ হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদাই আপনাদের পাশে থাকবে।

 

এছাড়া গত ২০২৪ সালের আগস্ট থেকেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অসামরিক প্রশাসনকে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষায় ও অস্থিতিশীলতা মোকাবেলায় সহায়তা করে যাচ্ছে।

দেশের এই বিশেষ সময়ে, সিলেট অঞ্চলের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় সমন্বিতভাবে একাগ্র চিত্তে কাজ করায় অসামরিক প্রশাসন, পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আনসার ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির আরও অবকাশ রয়েছে এবং আমরা সে অনুযায়ী যৌথ প্রয়াস অব্যাহত রাখবো। সর্বোপরি সিলেট বিভাগের অভ্যন্তরীন শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর।

তিনি ৭১ ও ২৪ এর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।