স্টাফ রির্পোটার:
শফিকুর রহমান খোকন, ওরফে টেন্ডার খোকন, পিতা ফজলুর রহমান, বর্তমানে বসবাস করেন খাদিমপাড়া ৬নং রোডের মির মহল্লা এলাকায়।
বর্তমানে এলাকাটি সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৪ নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভূক্ত। শফিকুর রহমান খোকন, ওরফে টেন্ডার খোকনের বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুরে।
দীর্ঘদিন থেকে সে সিলেটে বসবাস করায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়ে। সিলেট মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজরটিলা এলাকার ত্রাস জাহাঙ্গীরের সাথে গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠলে রাতারাতি হয়ে উঠেন জাহাঙ্গীরের সকল অপকর্মের একান্ত সহযোগী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মেজরটিলা এলাকায় জমিদখল, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজি, টিলা দখল নিয়ন্ত্রণ করতো এই শফিকুর রহমান খোকন, ওরফে টেন্ডার খোকন।
বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে মেজরটিলা থেকে খাদিমপাড়া এলাকায় কেউ বসতবাড়ি কিংবা কোন জায়গা বেচাকেনা করতে গেলে জাহাঙ্গীর বাহিনীকে চাঁদা না দিয়ে নিজের জমির উপরে কোন কাজই করতে পারতেন না।
কারণ জাহাঙ্গীরের ছিলো একক রামরাজত্ব। আর সবার আগে সেখানে জাহাঙ্গীরের হয়ে চাঁদার জন্য হাজির হতেন এই শফিকুর রহমান খোকন,ওরফে টেন্ডার খোকন।
চাহিদা মতো চাঁদা না পেলে খোকনের নেতৃত্বে র্টাগেটকৃত ব্যক্তিকে উঠিয়ে নিয়ে আসা হতো জাহাঙ্গীরের গোপন টর্চার সেলে।
সেখানে খোকনের নেতৃত্বে চলতো নির্যাতন। হত্যার হুমকি দিয়ে ঐ ব্যক্তির স্বজনদের কাছ থেকে চাহিদামতো চাঁদা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো।
মামলা না করতে নেওয়া হতো সাদা স্ট্যাম্পে সাক্ষর। এরকম একাধিক অভিযোগের শেষ নেই খোকনের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে, মেজরটিলা এলাকায় জোরপূর্বক কয়েকটি টিলা জবর দখল করে সেই সব টিলা কেটে প্লট বানিয়ে বিক্রি করে জাহাঙ্গীর বাহিনী কয়েক শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই খোকনের নেতৃত্বে।
গত বছরের শেষ দিকে একটি টিলা ধসের ঘটনায় জাহাঙ্গীর বাহিনীর নাম চলে আসে। তখন এলাকাবাসী বিক্ষুদ্ধ হয়ে নানা রকম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও ভয়ে কেউই মুখ খোলেনি।
পরে ঘটনাটি খোকন ও জাহাঙ্গীর মিলে ধামাচাপা দিয়ে দেয়। কারণ জাহাঙ্গীর তখন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ছিলেন।
জাহাঙ্গীর ৩৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হওয়ায় খোকন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন। জাহাঙ্গীর আলম সিসিকের কাউন্সিলর হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন খোকনসহ তার বাহিনীকে দমনের বদলে আরো শেল্টার দিতে শুরু করে। খোকনের নেতৃত্বে বাড়তে থাকে চাঁদাবাজী।
গত ৫ই আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও এখনো বহাল তবিয়তে আছেন শফিকুর রহমান খোকন, ওরফে টেন্ডার খোকন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জনাযায় সিলেট নগরীর বি,আই,ডি,সি এলাকায় শফিকুর রহমান খোকন, ওরফে টেন্ডার খোকনের একটি অটোরিক্সার গ্যরেজ রয়েছে যেখানে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের মদ ও ইয়াবা সেবনের আসর বসতো।
বিগত ৫ই আগষ্ট স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতনের পর এই খোকন তার নিজের বাসায় স্থানীয় অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকে আশ্রয় দিয়ে সীমান্ত পার করে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার উপর।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে অনেকে জানান, এক সময়ে আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজ খোকন এখন নিজে দল পাল্টাতে স্থানীয় কিছু বি এন পির নেতার সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছেন।
তাদের সাথে সম্পর্কের সুযোগ কাজে লাগিয়ে খোকন এখন দল বদলের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এক সময়ে আওয়ামীগ এর চাঁদাবাজ খোকনকে বি,এন,পিতে পূর্নবাসন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন স্থানীয় কিছু বি,এন,পির নামধারী নেতা।
কারণ রাত হলে তারা খোকনের সেই অটোরিক্সার গ্যরেজে মদের আসরে যোগ দিচ্ছেন। আর এখন যারা খোকনকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন বিগত সরকারের আমলে তারা দিনে বিএনপি আর রাতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন বলে এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে।
একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে বর্তমানে খোকনকে সিলেট মহানগর বিএনপির ৩৪নং ওয়ার্ডে পূর্ণবাসন করতে অর্থনৈতিক লেনদেনও চালিয়ে যাচ্ছেন শফিকুর রহমান খোকন,ওরফে টেন্ডার খোকন।
তবে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত এই চাঁদাবাজকে বিএনপিতে পূর্ণবাসন করা নিয়ে নিজ দল বি,এন,পিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
শফিকুর রহমান খোকন,ওরফে টেন্ডার খোকনের ফেইসবুক ঘুরে দেখা যায়, এক সময় খোকন যেখানে তার ফেইসবুকে আওয়ামী লীগ আর ৩৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীরের বন্ধনায় ভরপুর করে রাখতেন ,
এখন রাতারাতি তা পাল্টে গেছে। এখন খোকন নিজের ফেইসবুকে বি,এন,পির বিভিন্ন কর্মকান্ডের গুণকির্তন করে যাচ্ছেন।
যাতে প্রতীয়মান হয় শফিকুর রহমান খোকন,ওরফে টেন্ডার খোকন বি,এন,পির একজন বড় মাপের বিশাল নেতা!