গোলাপগঞ্জে হরতালে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ২ আটক ১
গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি:
বিএনপির ডাকা সারা দেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল গোলাপগঞ্জে ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। হরতালের শুরুতে রোববার সকালে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে ছোট, ছোট যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়। তাছাড়া মাঠে আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল সরব। যদি সিলেটের উদ্দেশে উপজেলার গোলাপগঞ্জ, ঢাকাদক্ষিণ ও ভাদেশ^র থেকে যাত্রীবাহী বাস চলাচল করতে দেখা না গেলেও গোলাপগঞ্জ-ঢাকাদক্ষিণ, ভাদেশ্বরের আঞ্চলিক সড়কগুলোতে অটোরিকশা, ব্যাটারী চালিত রিকশা,–– রিকশা ইত্যাদি চলেছে, তবে ব্যক্তিগত যানবাহন কম দেখা গেছে। স্কুল-কলেজ ও অফিসমুখী লোকজনও ছিলেন রাস্তায়। কোথাও হরতাল আহ্বানকারী দলের পিকেটারদের উপস্থিত দেখা যায়নি। তবে প্রায়ই রাস্তায় টায়ার জ¦লতে দেখা গেছে।
সকালে উপজেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় ঢাকাদক্ষিণ ও উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান দেখা গেছে।
এদিকে রোববার ভোর ৬টার দিকে উপজেলার হেতিমগঞ্জ বাজারে হরতালের পিকেটিং করার সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ হামলায় আহত হন সিলেট জেলা বিএনপির সহ শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক তামিম ইয়াহইয়া আহমদ ও ছাত্রদল কর্মী হাবিব আহমদ। এছাড়াও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের আরেক কর্মী আব্দুস শহীদকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
জানা যায়, হরতাল পালনে রবিবার ভোর ৬টায় হেতিমগঞ্জ বাজারে আসেন সিলেট জেলা বিএনপির সহ শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক তামিম ইয়াহইয়া আহমদ, যুবদল নেতা হাবিবসহ স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বাজারে অবস্থান নেওয়ার আগেই তামিম ও হাবিবের উপর উপর অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।
এসময় তাদের রামদার আঘাতে গুরুতর আহত হন বিএনপি নেতা তামিম ইয়াহইয়া আহমদ। হামলাকারীরা তাকে ধাওয়া করলে তিনি আত্মরক্ষার্থে বাজারের পশ্চিম প্রান্তে মোল্লগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আশ্রয় নেন। মাদরাসা রোডে পালিয়ে যান তার সাথে থাকা হাবিব।
এরপর তামিমের আহত হওয়ার খবর শুনে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে কয়েকজন কর্মী বিদ্যালয়ের সামনের সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে আসামাত্র বাজারের দিক থেকে ছুটে আসেন ছাত্রলীগ কর্মীরা।
তাদের সাথে দুই গাড়ি পুলিশও ছিলো। ফাঁকা গুলির আওয়াজে হরতালকারীরা গ্রামের ভেতরের রাস্তাায় ঢুকে গেলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় নারী-পুরুষ। মর্নিং ওয়ার্কে বের হওয়া মহিলাসহ মসজিদের মক্তবে আসা শিশুরা ভয়ে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন।
একপর্যায়ে গ্রাম্য রাস্তায় মোটরসাইকেলে থাকা ছাত্রদল কর্মী আব্দুস শহিদকে গ্রেফতার করে মোটরসাইকেলসহ থানায় নিয়ে যায়।
অপরদিকে, আহত তামিম ইয়াহইয়াকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয় জনতা। তিনি গ্রামেরই একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাকে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ঘটনার পর পরই বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এমনকি মোল্লাগ্রামের ভেতরেও পুলিশী টহল জোরদার করা হয়। সকাল ১০টার দিকে ৫ গাড়ি পুলিশ গ্রামের বিভিন্ন রাস্তা প্রদিক্ষণ করেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক সুমন চন্দ্র সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। এসময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ছাত্রদলের একজন কর্মীকে মোটরসাইকেল সহ আটক করে থানায় আনা হয়েছে।
এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সর্তক অবস্থানে রয়েছে।