কানাইঘাট থানা পুলিশের চোরাচালান বিরোধী অভিযান জোরদার-অর্ধকোটি টাকার মালামাল আটক
কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ
সিলেটের কানাইঘাট থানা পুলিশ, বিজিবি ও অন্যান্য আইন—শৃঙ্খলা বাহিনীর জোরালো অভিযানে কানাইঘাটে চোরাচালান কর্মকান্ড অনেকটা কমে এসেছে। বিশেষ করে সিলেটের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন এর নির্দেশে ও কানাইঘাট সার্কেলের এএসপি অলক কান্তি শম্মার্র দিকনির্দেশনায় থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম দস্তগীর আহমেদ এর নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম প্রতিদিন চোরাচালান ও মাদক বিরোধী ষাড়াসী অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।
পাশাপাশি প্রতিদিন বিভিন্ন মামলার সাজাপ্রাপ্ত ও ওয়ারেন্ট ভুক্ত পলাতক এবংনিয়মিত মামলার আসামীদের গ্রেফতার করছে পুলিশ।
সম্প্রতি সময়ে দেশে চিনির দাম বেড়ে যাওয়ার কারনে চিনি সহ বিভিন্ন ধরনের ভারতীয় পন্য কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশ করে আসছিল। চোরাচালান প্রতিরোধে সিলেটের পুলিশ সুপারের নির্দেশে কানাইঘাট থানা পুলিশের চোরাচালান বিরোধী অভিযান জোরদার করলে সুফল পায় পুলিশ।
এতে গত দুই মাসে অর্ধ কোটি টাকার ভারতীয় চিনি সহ বিভিন্ন প্রকার চোরাই মালামাল আটক করতে সক্ষম হয় থানা পুলিশ।
পুলিশি অভিযান জোরদার করার কারনে রাস্তা—ঘাটে বেপরোয়া গতিতে ভারতীয় চোরাই পণ্য পরিবহন পিকআপ—সিএনজি সহ হাট— বাজারগুলোতে চিনি মজুদ ও সরবরাহ অনেকটা কমেছে।
গত দু’মাস থেকে প্রতিদিন পুলিশি অভিযানের মাধ্যমে চোরাচালান প্রতিরোধ কমিয়ে আনার পাশাপাশি চোরাচালানের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং চোরাচালান বন্ধে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়।
এতে সীমান্ত এলাকা দিয়ে কানাইঘাটে ভারতীয় চিনি সহ বিভিন্ন ধরনের চোরাই পণ্য নিয়ে আসার উপদ্রব কমে এসেছে।
থানা পুলিশের অভিযানে গত জুলাই মাসে ১০০ বস্তা (৫ হাজার কেজি) ভারতীয় চিনি, ৯৫২ পিস ভারতীয় শাড়ি, ২৭০ বোতল বিদেশীমদ, ৮টি ভারতীয় মহিষ এবং আগস্ট মাসে ৯৯ বস্তা (৪ হাজার ৯৫০ কেজি) ভারতীয় চিনি, ৪৬টি ভারতীয় সিএনজি গাড়ীর টায়ার, ১৯০ পিস ইয়াবা, ৬২ হাজার পিস নাসির বিড়ি, ৪২ বোতল বিদেশী ও ৫৮ বোতল ভারতীয় অফিসার চয়েস মদ, ৩০ বোতল ফেন্সিডিল সহ অর্ধকোটি টাকার
মালামাল আটক করা হয়েছে।
এছাড়াও ভারতীয় চিনি পরিবহন করায় কয়েকটি সিএনজি অটোরিক্সা ও পিকআপ গাড়ীও জব্দ করে পুলিশ।
গত জুলাই মাসে এসব ভারতীয় অবৈধ মালামাল আটকের সাথে জড়িত সহ অন্যান্য বিভিন্ন মামলার ৪৯ জন আসামী গ্রেফতারের পাশাপাশি, ২টি মাদক ও ৬টি বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা এবং আগস্ট মাসে ৪১ জন বিভিন্ন মামলার আসামী গ্রেফতার সহ ৫টি মাদক ও ৬টি বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
চোরাচালান বিরোধী অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে থানার ওসি গোলাম দস্তগীর আহমেদ বলেন, কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাচালান শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার জন্য থানা পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সহ অন্যান্য আইন—শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছেন।
দেশে চিনির দাম বেড়ে যাওয়ার কারনে ভারত থেকে অবৈধভাবে চিনি আনা বন্ধ করতে এর সাথে জড়িত চোরাকারবারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ভারতীয় চিনি সহ অন্যান্য মালামাল এবং মাদক দ্রব্যের কেনা—বেচার সাথে জড়িতদের আটক করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কারনে বর্তমানে চোরাচালান অনেকটা কমে এসেছে।
চোরাচালান বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে। চোরাচালান প্রতিরোধে থানা পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য সবার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।