সিলেটে নার্সের বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে মামলা : হাসপাতালে অনুপস্থিত নার্স শাহনাজ

 

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ

 

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ নার্স শাহনাজ আক্তার সাবিহার বিরুদ্ধে গৃহকর্মী জান্নাতকে বিভিন্ন অপবাদ-অজুহাতে বর্বর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

 

এ ব্যাপারে নির্যাতিতার পিতা গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকার মো. জাকির হোসেন খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় সোমবার (০৩ জুলাই) রাতে মামলা দায়ের করেছেন।

 

জানা গেছে, জান্নাতের বাবা মো. জাকির হোসেন খানের বাড়ি ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স শাহনাজ আক্তার সাবিহার বাবার বাড়ি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকার চৈলাখেল গ্রামে। সেই সুবাদে জাকিরের মেয়ে জান্নাতকে শাহনাজ তার বাসায় গত বছরের জানুয়ারি থেকে মাসিক ১ হাজার ৫০০ টাকা বেতনে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজে নেন।

 

কিন্তু ওই বাসায় যাওয়ার পর থেকেই জান্নাতের ওপর নেমে আসে বর্বর নির্যাতন। ভাত বেশি খাওয়াসহ বিভিন্ন অপবাদ-অজুহাতে জান্নাতকে শাহনাজ ও তার স্বামী পলাশ মিয়া এবং বোন রেহেনা আক্তার রুমি প্রায় প্রতিদিনিই বেধড়ক মারধর করেন। এমনকি রান্নার কাজে ব্যবহৃত স্টিলের খুন্তি আগুনে গরম করে জান্নাতের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছ্যাঁকা দিয়েও নির্যাতন করতেন তারা। কিন্তু এসব বিষয় পরিবারকে জানালে জান্নাতকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতেন শাহনাজরা। তাই এতদিন জান্নাত মুখ খোলেনি।

 

নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ দেড় বছরে একবারও জান্নাতকে বাবার বাড়ি যেতে দেননি শাহনাজ। এবার ঈদুল আজহায় শাহনাজ তার বাবার বাড়ি বেড়াতে যান। সঙ্গে যায় জান্নাত। সে সেখানে গিয়ে এক ফাঁকে বাবার বাড়ি গেলে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পরিবারের লোকজনের চোখে পড়ে। এ সময় তারা জিজ্ঞাসাবাদ করলে জান্নাত তার ওপর চলা নির্যাতনের কথা খুলে বলে।

 

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ নার্স শাহনাজ আক্তার সাবিহার মোবাইল ফোনে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

 

বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) মহাসচিব ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্সিং কর্মকর্তা মো. ইসরাইল আলী সাদেক বলেন, শাহনাজ সোমবার থেকে হাসপাতালে অনুপস্থিত রয়েছেন। তাকে ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না।

 

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, জান্নাত নামের কিশোরী গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা তদন্তে পাওয়া গেছে। তার শরীরে বেশ কিছু স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সে হাসাপতালে চিকিৎসাধীন। এ নির্যাতনের ঘটনায় মামলা করার পর থেকে অভিযুক্তদের খুঁজছে পুলিশ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।