‘সিলেট-ম্যানচেস্টার রুটে বিমানের ফ্লাইট নিয়ে টালবাহানা সহ্য করা হবে না’

সুরমা টাইমস ডেস্ক :

সিলেট-ম্যানচেস্টার রুটে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট নিরবচ্ছিন্নভাবে চালু রাখার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ‘ইউকে এনআরবি সোসাইটি’র নেতৃবৃন্দ।

গত শনিবার (২৫শে জানুয়ারি) রাত ৮টায় সিলেট মহানগরের পূর্ব জিন্দাবাজারস্থ একটি  রেস্টুরেন্টে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন- সিলেট-ম্যানচেস্টার রুটে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট নিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের সঙ্গে কোনো টালবাহানা না নাটকীয়তা সহ্য করা হবে না।

প্রয়োজনে নর্থ ইংল্যান্ডে অবস্থানরত সিলেটিদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে রেমিট্যান্স বন্ধ করে দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ‘ইউকে এনআরবি সোসাইটি’র পরিচালক এম আহমদ জুনেদ। তিনি বলেন- দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ২০২০ সালে দ্বিতীয় দফা চালু হয় সিলেট-ম্যানচেস্টার রুটে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট। ফ্লাইটটি আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

এ রুটে নর্থ ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার, লুটন, বার্মিংহাম, ওয়েলস, স্কটল্যান্ডসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৩ লাখ সিলেটি যাতায়াত করেন। ম্যানচেস্টার এয়ারপোর্ট থেকে ১০ ঘন্টায় আমরা সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছতে পারি।

সবচেয়ে বেশি সুফল ভোগ করেন বয়োবৃদ্ধ ও শিশু যাত্রীরা। কিন্তু প্রায় দুই মাস আগে বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে এ রুটের ফ্লাইটের অনলাইন টিকিটিং সিস্টেম বাতিল করে দেয়। পরে আমরা বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে জানতে পারি- সিলেট-ম্যানচেস্টার রুটকে অলাভজনক দেখিয়ে টিকিটিং বন্ধ করে দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ।

বিষয়টি নিয়ে নর্থ ইংল্যান্ডে বসবাসকারী সিলেটিদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। প্রথমে আমরা ম্যানচেস্টারে কয়েক শ প্রবাসী একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করি।

একই সঙ্গে আমরা ম্যানচেস্টারস্থ বাংলাদেশের উপ-দুতাবাস ও বিমানের কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপি দেই এবং চলতি বছরের প্রথম দিকে আমরা দেশে এসে ফ্লাইট চালু রাখার দাবি জোরালোভাবে বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে থাকি।

আমরা বিমান বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও এমডিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দেখা করে যৌক্তিক এ দাবি তুলে ধরি।

অপরদিকে, আমাদের দাবির সঙ্গে একাত্ম হয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা আরিফুল হক চৌধুরী গত বুধবার বিমানের চেয়ারম্যান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।

এ সময় বিমানের চেয়ারম্যান ফ্লাইট চালু রাখার আশ্বাস দেন। কিন্তু ৩-৪ দিন হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অনলাইন টিকিটিং সিস্টেম চালু করেনি বিমান কর্তৃপক্ষ। ফলে কিছুটা আশঙ্কা কাজ করছে আমাদের মাঝে।

এম আহমদ জুনেদ তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন- বর্তমানে সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট চালু আছে সিলেট-ম্যানচেস্টার রুটে। জানতে পেরেছি- আগামী হজ মৌসুমের জন্য এই দুটি ফ্লাইট বন্ধ রাখতে চাচ্ছে বিমান বাংলাদেশ।

এ ক্ষেত্রে আমাদের দাবি- পবিত্র হজের জন্য একটি ফ্লাইট নিয়ে গিয়ে একটি ফ্লাইট ম্যানচেস্টার রুটে চালু রাখা প্রয়োজন।

কারণ- ঈদুল আযহায় কুরবানিসহ ঈদ পালনে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী সিলেট আসেন। একসঙ্গে দুটি ফ্লাইট বাতিল করা হলে এসব প্রবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়বেন।

‘ইউকে এনআরবি সোসাইটি’র নেতৃবৃন্দ জানান- সিলেট-ম্যানচেস্টার বিমানের রুট কখনোই অলাভজনক নয়। কিছুসংখ্যক মধ্যসত্বভোগীর কারণে যাত্রীরা বেশি টাকা দিয়ে পর্যন্ত টিকিট কিনেন।

বিমান সেই টাকা কেন  পায় না, সেটি তাদেরই খোঁজে বের করে প্রতিকার করতে হবে। সিলেট-ম্যানচেস্টার রুটের ফ্লাইট নিয়ে বিমান কর্তৃপক্ষ প্রবাসীদের সঙ্গে কোনো টালবাহান বা নাটকীয়তা করলে নর্থ ইংল্যান্ডের থাকা প্রবাসীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রেমিটেন্স বন্ধ করে দেবেন।

সুতরাং দ্রুত অনলাইন টিকিটিং সিস্টেম চালু করে যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের শঙ্কা দুর করতে হবে।

সিলেট-ম্যানচেস্টার রুটে বিমানের ফ্লাইট চালু রাখার বিষয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করেন ‘ইউকে এনআরবি সোসাইটি’র নেতৃবৃন্দ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।