‘শিক্ষার আলো থেকে দূরে নেশার অন্ধকারে ডুবিয়ে রাখা হয়েছিল চা জনগোষ্ঠীকে’
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ
শিক্ষার আলো থেকে দূরে শত শত বছর নেশার অন্ধকারে ডুবিয়ে রাখা হয়েছিল চা জনগোষ্ঠীকে । এখন শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে এগিয়ে এসেছেন অনেকেই। বাকিদের ও এগিয়ে আনতে হবে। কিন্ত বাগানে স্কুল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলে এই উদ্যোগ ব্যহত হবে। তাই স্কুল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে চা বাগান মালিকদের ইতিবাচক ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি।
সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আশফাক আহমদ এই আহ্বান জানিয়েছেন। সিলেটে অক্সফ্যাম ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এর সহায়তায় এবং ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স এর উদ্যোগে লিডারশীপ এমবডি এসোসিয়েশন ডিমানডিং টু এনসিওর রাইটস (লিডার)’ শীর্ষক প্রকল্প পরিচিতি সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।
বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) বিকালে সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাছরীন আক্তারের সভাপতিত্বে¡ সভা সঞ্চালনা করেন প্রকল্প সমন্বয়কারী পারভেজ কৈরী। সভার শুরুতেই স্বাগত ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স এর প্রকল্প পরিচালক মোঃ জাহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসিনা বেগম চৌধুরী, সিলেট সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছা: শামীমা আক্তার, মিল্লাত আহমদ চৌধুরী, সিলেট আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর’র উপ-পরিচালক মোঃ খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভ্যালী সভাপতি রাজু গোয়ালা, সহ সভাপতি পংকজ কন্দ।
অনুষ্ঠানে লিডার প্রকল্পের উপর পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’র ড. মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান। তিনি বলেন, প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো
লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধে চা বাগানের নারী শ্রমিক ও কিশোরী মেয়েদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটানো এবং দায়িত্ব বাহককে জবাবদিহি করা।
উদ্দেশ্য হলো নারী শ্রমিক ও কিশোরী মেয়েদের জন্য মতামত প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করা যাতে তারা সম্মিলিতভাবে তাদের অধিকার রক্ষার জন্য মতামত প্রদান করতে পারেন। চাবাগনের নারী শ্রমিক এবং কিশোরীদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নেতৃত্বেও বিকাশ ঘটবে এবং নিজেদের উন্নয়নে তা প্রয়োগ করতে পারবে। এরই ধারাবাহিকতায় চা বাগানের নারী শ্রমিকরা উপযুক্ত নেতৃত্ব ও দক্ষতা অর্জন করে বিভিন্ন স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।
প্রকল্পটির উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে কয়েকটি কাজ হলো সক্ষমতা উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা যাচাই করা। আমরা পারবো-নারী ও কিশোরী সংঘ গঠন।
কমিউনিটির চা বাগানের নারী শ্রমিক এবং কিশোরী দলে নিয়মিত মাসিক সভা আয়োজন। চাবাগানের নারী ও কিশোরী মেয়েদের জন্য জীবন দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ। জেন্ডার টক বা নারী পুরুষের বৈষম্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ। সমঝোতা, যোগাযোগ এবং নেতৃত্ব উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান। জেন্ডার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন।
সরকারি কর্তৃপক্ষ, চাবাগান মালিক ও বাচাশ্রই এর মধ্যে ডায়ালগ সেশন আয়োজন। স্টেকহোল্ডারদের সাথে লার্নিং শেয়ারিং মিটিং আয়োজন করা ইত্যাদি।
উল্লেখ্য যে, প্রকল্পটি সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার এবং সিলেট জেলার ২৫ টি চাবাগান নিয়ে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আল-আজাদ, দৈনিক যুগান্তরের সিলেট বিভাগীয় প্রধান সংগ্রাম সিংহ, চ্যানেল টুয়েন্টফোর’র সিলেট বিভাগীয় প্রধান সজল ছত্রী, মহিলা বিষযক অধিদপ্তর, সিলেট’র উপ- পরিচালক শাহিনা আক্তার, সিলেট সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নূসরাত-এ এলাহী, সিলেট সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো: আব্দুল আহাদ, ৪ নং খাদিমপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: বদরুল ইসলাম আজাদ, বুরজান চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো: কামরুজ্জামান চৌধুরী, মো: কামরুজ্জামান ও লাক্কাতুরা চা বাগানের ব্যবস্থাপক শহীদ আক্তার।
অনুষ্ঠানে সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আশফাক আহমদ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাছরীন আক্তার উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স ও অক্সফ্যামকে সকল ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে উপজেলার সংশ্লিষ্ট সরকারি বেসরকারি দপ্তরের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ এবং বিটিএস কর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।