নিউজ ডেস্ক:
কবি আবদুল গফ্ফার দত্তচৌধুরী’র ১১১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে তাঁর রচিত গানের আসর, সনেটসমগ্র প্রকাশনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনের দ্বিতীয় তলায় অনুষ্ঠানের শুরুতে আবদুল গফ্ফার দত্তচৌধুরী রচিত গানের প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়।
আবদুল গফ্ফার দত্তচৌধুরী স্মৃতি পর্ষদ সিলেটের আয়োজনে বিকাল ৪টায় কবির সনেটসমগ্র প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ব্যারিস্টার মো. আরশ আলী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডীন(মানবিক অনুষদ) ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ডেপুটি রেজিস্টার, লেখক ও গবেষক মিহির কান্তি চৌধুরী, কবি ও লেখক এনায়েত হাসান মানিক, কবি ও প্রাবন্ধিক এ কে শেরাম। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা তবারক হোসেইন।
সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী মাধব কর্মকারের সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন আবদুল গফ্ফার দত্তচৌধুরী স্মৃতি পর্ষদ, সিলেটের সভাপতি আলী মোস্তাফা চৌধুরী।
সভায় বক্তারা বলেন, কবি আবদুল গফ্ফার দত্তচৌধুরী একজন অসাম্প্রদায়িক মানুষ ছিলেন। ১৮ বছর বয়সে তিনি প্রথম সনেট লিখেন।বিস্মৃতির চোরাবালিতে প্রায় হারিয়ে যাওয়া কবি আবদুল গফ্ফার দত্তচৌধুরী এক নিভৃতচারী শিল্প-সাধক। যাঁর বিপুল সৃষ্টিসম্ভার পাণ্ডুলিপি আকারেই স্তূপীকৃত।
আর কীট দংশনে আক্রান্ত। কেবল প্রকাশের অভাবে তিনি আজ উজ্জ্বলখ্যাতি থেকে বঞ্চিত। ‘অখ্যাত’ কবি অভিধা নিয়ে একজন প্রতিভাধর কবি বিশ শতকের শেষার্ধে (১৯৬৬) মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন। বাংলা কবিতা-অঙ্গনে এটা এক বড়ো ট্র্যাজেডি। কারণ কবি আবদুল গফ্ফার দত্তচৌধুরী যেসব কবিতা, গান, কীর্তন, রুবাই, গজল প্রভৃতি রচনা করেছেন, এর মধ্যে সনেটের সংখ্যাই বেশি।
এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তাঁর অপ্রকাশিত পান্ডুলিপির সংখ্যা উনপঞ্চাশ। এর মধ্যে শুধু সনেটগ্রন্থ তেরোটি। এছাড়া তাঁর অন্যান্য কাব্যেও অনেক সনেট অন্তর্ভুক্ত আছে। সব মিলিয়ে কবির রচিত সনেটের সংখ্যা প্রায় এক হাজার হবে। সেদিক থেকে বলতে গেলে কবি আবদুল গফ্ফার দত্তচৌধুরী সমগ্র বাংলা কাব্যসাহিত্যে সর্বাধিক সংখ্যক সনেট রচয়িতা। এমনকি বিশ্বের অন্য ভাষায় তাঁর সমপরিমাণ সনেট কোনও কবি রচনা করেছেন, এমন দৃষ্টান্তও দৃশ্যমান নয়।
আলোচনা সভা শেষে শিশুশিল্পীদের দলীয় ও আমন্ত্রিত শিল্পীরা বিভিন্ন পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ছিলেন হিমাংশু বিশ্বাস, সুকোমল সেন, বিজন কান্তি রায়, মিতালী বঙ্গবর্তী, সুস্মিতা চন্দ ঐশী।
পরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সনদ ও পুরস্কার প্রদান করেন অতিথিবৃন্দ। গানের প্রতিযোগিতায় ১ম হয়েছে কাইমা আক্তার রিনিয়া, ২য় হয়েছে সর্বশ্রী তালুকদার, ৩য় হয়েছে রত্নশ্রী তালুকদার। প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন হিমাংশু বিশ্বাস ও সুকোমল সেন।