জাফলংয়ে টাস্কফোর্স অভিযান: ৭৭টি ক্রাশার মেশিনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃঃ

সিলেটের জাফলংয়ে আরও ৭৭টি পাথর ভাঙার ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৫ জুন) সকাল থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দ্বিতীয়বারের মতো এই অভিযান চালায় টাস্কফোর্স।

 

অভিযানে নেতৃত্ব দেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী। এ সময় গোয়াইনঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কবির হোসেন, বিদ্যুৎ বিভাগ জৈন্তাপুরের আবাসিক প্রকৌশলী সজল চাকলাদার, বিজিবির সংগ্রাম বিওপির ক্যাম্প কমান্ডার শহীদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অভিযানে ৭৭টি পাথর ভাঙার ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

অভিযান শেষে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, ‘অবৈধ স্থাপনা ও পরিবেশবিধ্বংসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান চলমান থাকবে।

কোনোভাবেই আইন অমান্যকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।’

অভিযানে অংশগ্রহন করে বিদ্যুৎ বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, পুলিশ, বিজিবি ও বন বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স।

এর আগে, গত বুধবার অভিযান চালিয়ে ৬৭টি ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মিটার জব্দ করা হয়।

গত ১৪ই জুন প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) জাফলং পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

 

এ সময় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে জাফলংসহ সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি ভবিষ্যতে ইজারা দেওয়া হবে না।

 

অন্যদিকে অবৈধ পাথরের ব্যবসা ঠেকাতে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান দ্রুততার সঙ্গে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে থাকা পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।

 

দুই উপদেষ্টার নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই গত ১৬ই জুন থেকে পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন।

 

এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ জানান, গত ১৬ই জুন থেকে এখন পর্যন্ত পাথর ভাঙার ২৫৯টি যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি মিটার জব্দ করা হয়েছে।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোয়ারি থেকে পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধে নির্দেশনা দেয় সরকার।

 

এরপর থেকে রাতের আঁধারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় অবৈধভাবে পাথর ও বালু উত্তোলন চলত।

 

গত ৫ই আগস্ট সরকারের পতনের পর কোয়ারির নিয়ন্ত্রণ নেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতায় হাজারো শ্রমিক পাথর উত্তোলন শুরু করেন।

 

এসব পাথর পাথর ভাঙার যন্ত্রের মালিকদের কাছে বিক্রি করা হয়। পরে সেসব পাথর মেশিনে ভেঙে ছোট করে ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করা হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।