সুরমা টাইমস ডেস্ক :
ঈদ আসছে। তাই নেতাদের ছবির পাশাপাশি নিজের বিশাল ছবি টানিয়ে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি নেতা।
কিন্তু দৃষ্টিপথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় একটি গাছ। শেষে বিলবোর্ডটি পথচারীদের দৃষ্টিগোচর করতে গাছটির সব ডাল কেটে দিয়েছেন তিনি।
এমন অভিযোগ মিলেছে সিলেট মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি ও সিলেট মহানগর বিএনপির ৯ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি মো. আমির হোসেনের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে নগরের পনিটুলা-মদিনা মার্কেট পয়েন্টের মধ্যখানের রোড ডিভাইডারে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন কবির আহমদ জানান, ‘মধ্য রাতে রাস্তার পাশে আমরা চা খাচ্ছিলাম। এমন সময় দেখতে পাই পনিটুলা ও মদিনা মার্কেট পয়েন্টের মধ্যবর্তী হোটেল গ্র্যান্ড আক্তারের সামনের সড়ক বিভাজনে একটি বড় গাছের ডাল কাটছেন এক ব্যক্তি।
আরো কয়েকজন নিচে দাঁড়িয়ে নির্দেশনা দিচ্ছেন। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম সিটি করপোরেশন বা বিদ্যুৎ বিভাগের কেউ ডাল কাটছেন।
পরে তাদের আচরণ দেখে সন্দেহ হলে এগিয়ে দিয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, বিলবোর্ডে ঈদ শুভেচ্ছা গাছের আড়ালে ডাকা পড়ে গেছে দেখা যাচ্ছে না। তাই ডালগুলো ছেটে দিচ্ছেন।
সিসিকের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তারা এড়িয়ে যান। এরপর তারা আরো সাতটি গাছের ডালপালা কেটে ছেঁটে ফেলেন।’
শুধু মদিনা মার্কেট এলাকায়ই নয়, নগরের বিভিন্ন স্থানে ঈদ শুভেচ্ছা জানাতে পোস্টার লাগাতে গিয়ে গাছের ডালপালা কাটা হচ্ছে।
অভিজ্ঞতা ছাড়া সাধারণ শ্রমিক দিয়ে এভাবে গাছের ডাল কাটার ফলে বৃক্ষের সহজাত বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিলবোর্ডে পাঞ্জাবি পড়া মো. আমির হোসেনের বড়সড় ছবি দেওয়া আছে।
তার ঠিক পেছনে উপরের দিকে বায়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের ছবি।
ডানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি বড় ছবি। এর উপরে ছোট করে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবি।
বিলবোর্ডে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আমির হোসেন লিখেছেন, ‘পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৯নং ওয়ার্ডসহ দেশ-বিদেশে অবস্থানরত সর্বস্তরের জনসাধারণকে জানাই পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা।’
তবে গাছের ডাল কাটার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. আমির হোসেন। তিনি বলেন, ‘বিলবোর্ডের জন্য গাছের ডাল কাটা হয়েছে এমন অভিযোগ সত্য নয়।
রোড ডিভাইডারের গাছগুলোর ডাল বড় হয়ে অনেক সময় বড় ট্রাক, ভার্সিটির দোতলা বাসের চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করে। সে কারণে যে কেউ এটি কাটতে পারেন।
সিটি করপোরেশন আবার বিদ্যুৎ বিভাগও অনেক সময় গাছের ডাল কেটে দেয়। অন্য কেউও অসুবিধার কথা চিন্তা করে কাটতে পারেন।’
যারা কেটেছেন তারাই বলেছেন বিলবোর্ডে ঈদ শুভেচ্ছা দেখা না যাওয়ায় কাটা হয়েছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যারা বলেছে তারা ফাউল। আমি কোনো ডাল কাটাইনি। অন্য কেউ কাটিয়েছেন।’
নগর কর্তৃপক্ষ গাছ কাটায়নি নিশ্চিত করে সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নেহার রঞ্জন পুরকায়স্থ বলেন, ‘বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপনের জন্য আবেদন করলে সিটি করপোরেশন অনুমোদন দেয়।
তবে গাছ কাটার অনুমোদন কখনই দেয় না। কারণ গাছা কাটার অনুমতি দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর।’
বিজ্ঞাপন দেখা না যাওয়ায় গাছের ডাল কাটা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
এদিকে গতকাল ২৮শে মার্চ শুক্রবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সিলেট জেলা ও মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক জরুরী প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরের ছবি সম্বলিত ব্যানার ও ফেষ্টুন না লাগানোর জন্য বারংবার খন্দকার আবদুল মুক্তাদির নেতা কর্মীদের নিষেধ করার পরও যারা তার ছবি ব্যাবহার করে ব্যানার ও ফেষ্টুন লাগিয়েছেন তা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিজ উদ্যোগে অপসারণ করার নির্দেশনা দেয়া হলো।
সৌজন্যে:— কালেরকন্ঠ