সুরমা টাইমস ডেস্ক :
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে ধর্ষণের শিকার হয়ে নিহত সেই শিশুটির।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ই মার্চ) রাত সাড়ে আটটার দিকে তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি, মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ অহিদুল ইসলাম, এসপি মীনা মাহমুদা, মাগুরা সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর সাফিনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে শিশুটির মরদেহ রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে হেলিকপ্টারযোগে মাগুরায় নিয়ে আসা হয়। সন্ধ্যা সাতটার দিকে শহরের নোমানী ময়দানে প্রথম জানাজা শেষে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
অন্যদিকে শিশুটির মৃত্যুর পর ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার আসামিদের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
রাত পৌনে ৮টার দিকে বাড়িটিতে আগুন দেওয়া হয়। মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে শিশুটির প্রথম জানাজার নামাজের পরপরই আসামিদের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেন স্থানীয়রা।
গত ৮ই মার্চ শিশুটিকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে।
যেকোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে তারা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেসসচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এক শোকবার্তায় শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
গত ৫ই মার্চ রাতে মাগুরা সদর উপজেলার নিজনান্দুয়ালি গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি।
শিশুটি রাতে তার বোনের সঙ্গে বিছানায় ঘুমিয়েছিল। কিন্তু গভীর রাতে হঠাৎ তার বোন তাকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরে তার সন্ধান শুরু করেন তিনি।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাড়ি থেকে কয়েক গজ দূরে মেয়েটিকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়।
সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে মাগুরা জেনারেল হাসপাতাল ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এবং পরে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়।
মেয়েটিকে ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। আসামিদের ফাঁসির দাবিতে সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।