সুরমা টাইমস ডেস্ক :
সিলেটের গোয়াইনঘাটে খেলা নিয়ে যুবলীগ নেতা সিরাজ উদ্দৌলা সুমন ও তার বাহিনীর হামলায় পশ্চিম জাফলং ক্রিকেট ও ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য বাহার উদ্দিন (৩২) নামক এক যুবক মৃত্যুপথযাত্রী হয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
যুবলীগ নেতার এমন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে হতবাক সাধারণ মানুষ। ৫ আগস্টের পরও যুবলীগ নেতা সিরাজের এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আতঙ্কিত এলাকার মানুষ।
যুবলীগ নেতা সিরাজ উদ্দৌলা সুমনকে গ্রেফাতারে পৃথক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধন থেকে গোয়াইনঘাটের প্রশাসনকে ২৪ ঘন্টার ভেতর গ্রেফতারের আল্টিমেন্টাম দেয়া হয়।
গুরতর আহত বাহার উদ্দিন গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের লাটি গ্রামের আলীম উদ্দিনের ছেলে। হামলাকারী যুবলীগ নেতা সিরাজ উদ্দৌলা সুমন ঠাকুরবাড়ি গ্রামরে আবদুল মালিকের ছেলে।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১৩ই ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৮টায় পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের আহারকান্দি বাজারস্থ আব্দুস শহিদের দোকানঘরের সামনে ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সদস্য সিরাজ উদ্দৌলা সুমন ও তার বাহীনি পার্শ্ববর্তী গ্রামের ফুটবল খেলোয়াড় বাহার উদ্দিনের উপর হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।
হামলা শেষে বাহারকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায় যুবলীগ সন্ত্রসী সুমন ও তার বাহিনী। এসময় এলাকার লোকজন তাকে সড়কে পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ায় হয়।
বাহারে অবস্থার অবনতি হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বর্তমানে ওসমানী হাসপাতালে মৃত্যুপথযাত্রী।
এ ব্যাপারে বাহার উদ্দিনের ভাই ফরিদ উদ্দিন গোয়াইনঘাট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে ফরিদ উদ্দিন বলেন, যুবলীগ নেতা সন্ত্রাসী সুমন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ১৭ বছর এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করেছে। তার অত্যাচারে এলকার লোকজন অতিষ্ঠ ছিল।
বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার উৎখাত করতে সে নানাভাবে গোয়াইনঘাট এলাকায় ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এখনো তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে ভয় পায়। গত ৫ই আগস্টের পর যুবলীগ নেতার এমন ঘটনা নিয়ে এলাকায় ভীতি সঞ্চার হয়েছে।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা সিরাজ উদ্দৌলা সুমনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমেদ জানান, আমরা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এদিকে গত শনিবার (১৫ই ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্থানীয় আহারকান্দি বাজারে অবিভক্ত পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন ছাত্র ও যুব সমাজের ব্যানারে এক মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
এতে ইউনিয়নের মুরব্বি আজিজুর রহমানেরর সভাপতিত্বে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সদস্য আজাদ আহমদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির নেতা প্রাক্তন ইউপি সদস্য মুহিবুর রহমান বাবুল,
সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, উপজেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, সিনিয়র সহ সভাপতি আমীর হোসেন, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ, সদর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি কামাল উদ্দিন, ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি সেলিম উদ্দিন, অভিযাত্রীক ক্লাবের সভাপতি মানিক আহমদ, বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির,
সিরাজ উদ্দিন, আব্দুল খালিক, বশির উদ্দিন মাষ্টার, মানিক মেম্বার ছাত্রনেতা ছান মিয়া, যুবদল নেতা সুলতান আহমদ প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা ২৪ ঘন্টার ভেতর পশ্চিম জাফলংয়ে ইউনিয়ন ফুটবল ও ক্রিকেট এসোসিয়েশন এর সদস্য বাহার উদ্দিনের উপর হামলাকারী যুবলীগ সন্ত্রাসী সিরাজ উদ্দৌলা সুমনকে গ্রেফাতারে দাবি জানান।