সুরমা টাইমস ডেস্ক:
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতরা সাত দফা দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় যাওয়ার পথে পুলিশি বাধায় রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
গতকাল রোববার (০২রা ফেব্রুয়ারি) হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের পাশের সড়কে গেলে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন আন্দোলনকারীরা। পরে সেখানেই অবস্থান নেন তারা।
এদিন সন্ধ্যায় মিরপুর সড়ক ছেড়ে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে যাত্রা করেন। রাত ৭টা ৩৯ মিনিটে হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের সামনে পৌঁছান তারা।
এর আগে শনিবার (১লা ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে আগারগাঁওয়ে মিরপুর রোডের উভয় পাশে অবস্থান নিয়ে সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা।
রোববার তারা দিনভর আগারগাঁও ও শিশুমেলা মোড়ে মিরপুর সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ- তাদের অনেকেই সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে সহায়তা পাওয়ার ধীরগতি নিয়েও বিক্ষোভ রয়েছে।
তাদের দাবি দ্রুত সুচিকিৎসা দিতে হবে, প্রয়োজনে বিদেশে পাঠাতে হবে।
এসব দাবি নিয়ে বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ রাস্তার মাঝে চাদর বিছিয়ে শুয়ে আছেন। রাস্তার মাঝে বেঞ্চ পেতেও বসে আছেন অনেকে।
আহতরা বলছেন, তাদের রক্তের বিনিময়ে দেশ থেকে স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে। তারা কেউ পুলিশের গুলি খেয়েছে, কেউ টিয়ারশেলে অন্ধ হয়েছেন। আবার কেউ পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
তাদের কারণে যে স্বাধীনতা সরকার ভোগ করছে, সেই তাদেরই চিকিৎসা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিতে অবহেলা করা হচ্ছে।
মো. আইয়ুব হোসেন নামে এক আন্দোলনকারী সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা সড়কে অবস্থান করব। যদি উপদেষ্টারা কেউ এসে আমাদের আশ্বস্ত করেন তবুও আমরা রাস্তা ছাড়ব না।
তাদের ওপর থেকে আমাদের আস্থা হারিয়ে ফেলেছি। এখন আর আশ্বাসে চলবে না।
বিকেল ৪টার মধ্যে আমাদের দাবি আদায় না হলে আমরা সচিবালয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করব।
পরবর্তী সময়ে আলটিমেটামের মেয়াদ আরও দুই ঘণ্টা বাড়িয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত করা হয়।
এর আগে গত শনিবার রাতে পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা।
এ সময় তারা সাত দফা দাবি জানান।
সেগুলো হলো::—
১. চব্বিশের যোদ্ধাদের মধ্যে আহত এবং শহীদদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ বিচার করতে হবে।
২. বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের সরকারের বিভিন্ন পদ থেকে অপসারণ ও গ্রেপ্তার করতে হবে।
৩. আহতদের ক্যাটাগরি সঠিকভাবে প্রণয়ন।
৪. আহতদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে বাস্তবায়ন।
৫. আহতদের চিকিৎসার সর্বোচ্চ সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. আহত এবং শহীদদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননাসহ প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
এবং-
৭. আহতদের আর্থিক অনুদানের অঙ্ক বৃদ্ধিসহ ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার বিষয় সুসংহত করতে হবে।