সুরসা টাইমস রিপোর্ট: সিলেটের বিছনাকান্দি দমদমিয়া সীমান্তএখন চোরচালানের স্বর্গরাজ্য। পাচঁআগস্টের পর থেকে সেই রাজ্যের নিয়ন্ত্রক স্থানীয় থানা পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক লেবাসধারী ব্যাক্তিবর্গ ও লাইনম্যানরা। গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি সীমান্তে অপ্রতিরুধ্য হয়ে উঠছে চোরাচালান। এর লাগাম টেনে ধরা যেনো এক অসম্ভব কাজ। প্রশাসন কর্তৃক সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করার পরও বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে, বিজিবির চোখে আঙ্গুল দিয়ে দিনরাত সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে চোরাকারবারীরা চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ চোরাচালান। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩ নং বিছনাকান্দী সীমান্তে ৬১/৬২ নং পিলার এলাকায় দমদমিয় সিমান্ত দিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে বাংলাদেশে আসতেছে শতকোটি টাকার ভারতীয় গরু,মহিষ, চিনি,অস্ত্র , কক্সমাটিক্স, মাদক, বিভিন্ন ব্রান্ডের স্মার্ট ফোন, মোটরসাইকেল , ইত্যাদি । এরই ধারাবাহিকতায় গত ৬ জানুয়ারী গোয়াইনঘাট উপজেলার দমদমীয়া সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যের ওপর চোরাকারবারিদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় বিজিবি সদস্য মাসুম বিল্লাহ’র বাম হাতের কবজির নিচে কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে আহত করে। এ ঘটনায় ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৪০ থেকে ৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ৬ জানুয়ারি রাতে সিলেট ৪৮ ব্যাটালিয়নের দমদমীয়া বিওপির সুবেদার মিজানুর রহমান বাদী হয়ে সিলেটের গোয়াইনঘাট থানায় এ মামলা করেন। মামলা নং-০৯ তারিখ-০৭/০১/২৫ । মামলার আসামীরা হলেন ১। ফারুক মিয়া(৩২) , ২। কামাল মিয়া (৩০), ৩। মাসুক মিয়া (৩৭), ৪। মো: সোহেল মিয়া(২২), ৫। আবুল মিয়া (৫২), ৬। মো : আয়েছ (২৮), ৭। আনোয়ার (২৯), ৮। মো: ফারুক মিয়া(৪৫), ৯।মো: কাছির মিয়া (২৮), ১০। মো : আবুল মিয়া (২৫) ,১১। মো: সালমান (২২), ১২। মো: এনামুল হক (২১), ১৩। মো; শরীফ উদ্দিন (২৫) , ১৪। মো: লেইস উদ্দিন (৩০), ১৫। মো : হারুন মিয়া (২৮), ১৬। মো: রুহুর মিয়া (২৫) , ১৭। মো: খলিল মিয়া (৪৪), ১৮। মো: মনির উদ্দিন (৩৫)সহ অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জন।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৬ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৩টার দিকে গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি ইউনিয়নে দমদমীয়া সীমান্তে ভীতরগুল নামক স্থানে অভিযান চালানো হয়। ওই সীমান্তের ১২৬১ পিলারের ১৫০ গজ বাংলাদেশ অভ্যন্তরে ভীতরগুল নামক স্থানে চোরাকারবারিরা ভারত থেকে ভারতীয় গরু আনছিল। এ সময় বিজিবি সদস্যরা চোরাকারবারিদের ধাওয়া করলে ৪০ থেকে ৫০ বিবাদী অতর্কিতভাবে বিজিবি সদস্যদের ওপর হামলা চালায় , এ সময় ধারালো দা দিয়ে বিজিবি সদস্য মাসুম বিল্লাহর বাম হাতের কবজির নিচে কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। চোরাকারবারিরা পাথর দিয়ে ঢিল ছুড়তে থাকে, পরবর্তীতে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। অভিযানে দুটি ভারতীয় গরু আটক করা হয়। গুরুতর আহত বিজিবি সদস্য মাসুম বিল্লাহকে চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায়, গোয়াইনঘাট থানার ওসি, সার্কেল এসপি, বিট অফিসার ও দমদমিয়া বিজিবির ক্যাম্প কামান্ডারসহ কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিছনাকান্দি সীমান্তের চোরাকারবারীরা । বিজিবি ও পুলিশের নিয়োগকৃত লাইনম্যানরা প্রতি রাতে বিজিবি ও পুলিশের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করে অবৈধভাবে চালিয়ে যাচ্ছে এ চোরাচালান বানিজ্য । যার কারনে দমদমীয়া সীমান্তে বিজিবির ওপর চোরাকারবারীদের হামলায় এখন পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেফতার করা হয় নি।
সুত্রমতে , দমদমীয়া সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের ওপর চোরাকারবারিদের হামলার মূলহোতা বিজবির লাইনম্যান ভিতরগোল গ্রামের সাবেক মেম্বার ফারুক আহমদ । তার বিরোদ্ধে নারী নির্যাতন, মাদক চোরাচালান মামলা, সহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এ ব্যাপারে দমদমিয়া বিজিবির ক্যাম্প কামান্ডার মিজানুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে অসীকৃতি জানান।
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমেদ বলেন, দমদমীয়া সীমান্তে চোরাকারবারিদের হামলায় বিজিবি সদস্য মাসুম বিল্লাহ গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দমদমীয়া বিওপির সুবেদার মিজানুর রহমান বাদী হয়ে সোমবার রাতে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা করেছেন। মঙ্গলবার সকালে মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা যায়নি। তবে বিজিবি সদস্যদের ওপর হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত আছে।
- শরীর নিয়ে লজ্জার তিক্ত অভিজ্ঞতা জানালেন দীঘি
- লন্ডনে খালেদা জিয়া, বিমানবন্দরে মাকে স্বাগত জানান তারেক রহমান