সাংবাদিক তুরাব হত্যা মামলা: তদন্ত শুরু করল পিবিআই
সুরমা টাইমস ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট প্রতিনিধি ও দৈনিক জালালাবাদের স্টাফ রিপোর্টার এ টি এম তুরাব হত্যা মামলার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বুধবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মোহাম্মদ মুরসালিনের নেতৃত্বে পিবিআই সিলেটের একটি টিম সিলেট মহানগরের বন্দরবাজারের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তুরাবের আহত হওয়ার ঘটনাস্থলটি পরিদর্শন করেছে। এ সময় সিলেটের সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল কাদের তাপাদার, দৈনিক প্রভাতবেলা সম্পাদক কবীর আহমদ সোহেলসহ বিপুলসংখ্যক সাংবাদিক-সহকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তদন্তকাজ দ্রুত শেষ করার আশ্বাস প্রদান করে পিবিআই। এর আগে আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে মামলার নথিপত্র কোতোয়ালি থানা পুলিশ পিআইবিকে বুঝিয়ে দেয়। পরিদর্শনকালে মোহাম্মদ মুরসালিন বলেন, আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই কাজ শুরু করেছি, দ্রুত তদন্তকাজ শেষ করার জোর প্রচেষ্টা চালাবো। সেদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি এবং মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিও ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাইসহ বিভিন্নভাবে আমরা তদন্তকাজ করে যাব। দোষী যে বা যারাই হোক- প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই জুমআর নামাজ শেষে নগরীর কোর্টপয়েন্টে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন সাংবাদিক এটিএম তুরাব। আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে জরুরি ভিত্তিতে সিলেট ইবনে সিনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে আইসিইউতে থাকাকালে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের সময় তুরাব মারা যান।
এই ঘটনায় প্রথমে গত ২৪ জুলাই রাতে নিহত তুরাবের ভাই আবুল আহসান মো. আজরফ (জাবুর) বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ সেটিকে মামলা হিসেবে না নিয়ে জিডি হিসেবে গ্রহণ করে। এ নিয়ে তুরাবের পরিবারসহ সিলেটের সাংবাদিক সমাজের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করে। পরে তুরাবের ভাই গত ১৯ আগস্ট সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের জন্য কোতোয়ালি থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। মামলায় ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০০-২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলায় উল্লিখিত আসামিরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (ক্রাইম, উত্তর) মো. সাদেক দস্তগীর কাউছার, উপকমিশনার (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি আজবাহার আলী শেখ, এসএমপির কোতোয়ালি থানার সহকারী কমিশনার (এসি) মিজানুর রহমান, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কল্লোল গোস্বামী, কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি মঈন উদ্দিন, পরির্দশক (তদন্ত) ফজলুর রহমান, এসআই কাজী রিপন আহমদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আপ্তাব উদ্দিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি পীযূষ কান্তি দে, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি ও ৩২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহেল আহমদ, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, শিবলু আহমদ, সেলিম মিয়া, সাজলু, আজহার, ফিরোজ ও উজ্জ্বল। কিন্তু মামলার ২ মাস পেরিয়ে গেলেও কোন অগ্রগতি না হওয়ায় সর্বশেষ পিবিআইতে স্থানান্তর করা হলো।